বেরোবিতে শিক্ষার্থীদের বাস আটকে রেখে বিক্ষোভ, ভোগান্তি

বেরোবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৬, ২০২২, ০৮:১৭ পিএম

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) সাধারণ শিক্ষার্থীদের বাস আটকে রেখে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ করেছে কতিপয় শিক্ষার্থী। এসময় প্রায় ৪৫ মিনিট বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন আটকে রাখেন তারা। আর এতে তীব্র ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ শিক্ষার্থীদের।

বুধবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্কের মোড় সংলগ্ন মূলফটক আটকে রেখে বিক্ষোভ করেন তারা। বিক্ষোভে হাতে গোনা ১৫-২০ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।

জানা যায়, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূলফটক দ্রুত নির্মাণের দাবিতে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ বেলা ১২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও পরে বিকেলে সাড়ে তিনটায় প্রতিবাদ শুরু হয়। এসময় শিক্ষার্থীদের বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করতে মূলফটকের সামনে গেলে তারা বাস আটকে দেয়। এতে প্রায় ৩০০ শিক্ষার্থী ভোগান্তিতে পড়ে। শুধু ক্যাম্পাসের বাসে আটকে পরা শিক্ষার্থী নয়, বাসের জন্য শহরের বিভিন্ন জায়গায় অপেক্ষারত শিক্ষার্থীরাও ভোগান্তির শিকার হয়।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা জানান, মূলফটকের জন্য দীর্ঘদিন বিভিন্ন সময় আন্দোলন বিক্ষোভ করে আসছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তবে আজকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আটকে রেখে কতিপয় শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করে, যা এর আগে কোন আন্দোলনকারি করেনি। আমরাও শিক্ষার্থী, আমাদের ক্লাস পরীক্ষা শেষে কেউ বাড়িতে আবার কেউ টিউশনে যাচ্ছিলাম। কিন্তু বাস এভাবে আটকে রেখে আমাদের ভোগান্তিতে ফেলানোর কোন মানে হয়না। অন্তত শিক্ষার্থীদের কথা ভেবে গেট ছেড়ে বাস যেতে সাহায্য করা দরকার ছিলো। সেশনজট যখন তলানিতে ঠিক সেমুহুর্তে স্বার্থান্বেষী একটি মহল কতিপয় শিক্ষার্থীদের উস্কে দিয়ে ক্যাম্পাসে বিশৃঙ্খলা করে আরো সেশনজটের ফেলানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।

অপরদিকে বাসের অপেক্ষায় থাকা রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী নিশান বাবু জানান, আমি টিউশন থেকে ফেরার পথে প্রায় ৩০ মিনিট ধরে অপেক্ষায় থাকার পরও বাস আসেনি। অনেক্ষণ অপেক্ষা করে বাস না পেয়ে অটোতে করে মেসে ফিরতে হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম বলেন, মূলফটক ইস্যুতে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে আছি। বর্তমান উপাচার্যের সাথে এ নিয়ে আমরা কথা বলেছি। খুব তারাতারি নির্মাণ কাজের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। কিন্তু বিক্ষোভ-আন্দোলনের নামে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলার চেষ্টা করলে আমরা এর উচিত জবাব দিবো।

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া বলেন, বিগত সময়ে আমরাই মূল ফটক নিয়ে আন্দোলন করেছিলাম। সেসময় প্রশাসনের লোকজন বিষয়টি নিয়ে নয়ছয় করেছিল। বর্তমান প্রশাসন মূলফটক নিয়ে বেশ আন্তরিক। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের পক্ষে রয়েছি। জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট করার লক্ষ্যে প্রশাসনকে বেকায়দায় ফেলে স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করলে আমরা দাঁতভাঙা জবাব দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর গোলাম রব্বানী বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি তৈরী করে কোন রকম আন্দোলন-বিক্ষোভ না করার আহবান জানাচ্ছি। যদি কেউ শিক্ষার্থীদের ভোগান্তিতে ফেলে আন্দোলন করে তাহলে এর দায় দায়িত্ব আন্দোলনকারিকে নিতে হবে।

ভোগান্তি তৈরী করে প্রতিবাদ-বিক্ষোভের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রতিবাদকারিরা জানান, কোন রকম ভোগান্তি তৈরী হয়নি। আমরা বাসে বাসে গিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করলে তারা বাস থেকে নেমে যায়।

কেএস