‘বুদ্ধিজীবী হত্যা একটি বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা’

বেরোবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৪, ২০২২, ০৬:৪৭ পিএম

বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান (প্রতিমন্ত্রী) প্রফেসর ড. এ কে আজাদ চৌধুরী বলেছেন, পরাজয় নিশ্চিত জেনে বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করার জন্য পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসররা জাতির বিবেক বুদ্ধিজীবীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে। বুদ্ধিজীবী হত্যা পৃথিবীর ইতিহাসে একটি বর্বরোচিত ও ন্যাক্কারজনক ঘটনা।

শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) আয়োজিত ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, পাকিস্তানী দোসর রাজাকারদের বিচার হয়েছে। কিন্তু দেশের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে তাদের অপকর্ম থেমে নেই। সকল ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অসাম্প্রদায়িক ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে সবাইকে নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহবান জানান তিনি।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে বেরোবি উপাচার্য ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ বলেন, বুদ্ধিজীবীরা তাদের মেধা,  প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে দেশকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে সহায়তা করে। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা রুখে দিতে একাত্তরের ঘাতকগোষ্ঠী এই হত্যাযজ্ঞ চালায়। রংপুরের আশপাশের বিভিন্ন বধ্যভূমি ও শহীদ বুদ্ধিজীবী পরিবার থেকে তথ্য সংগ্রহ করে আগামীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে স্মরণিকা প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, এই সংকলনের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের সঠিক ইতিহাস জানার সুযোগ তৈরি হবে।

উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদের সভাপতিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ। এছাড়াও বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় আলোচক হিসেবে অংশ নেন কবি ও কথা সাহিত্যিক মাসুদুল হক ও এ্যাডভোকেট ফিরোজ কবির গুঞ্জন।

বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. শফিকুর রহমানের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বেরোবি শহীদ বু্িদ্ধজীবী দিবস-২০২২ পালন কমিটির আহবায়ক প্রফেসর কমলেশ চন্দ্র রায়, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মোঃ শরিফুল ইসলাম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ারুল আজিম, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, বেরোবি ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুর রহমান শামীম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

এর আগে সকালে রংপুর নগরীর দমদমা বধ্যভূমিতে শোক র‌্যালি ও বীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. সরিফা সালোয়া ডিনা ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মজিব উদ্দিন আহমদ। পরে পর্যায়ক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, দপ্তর ও আবাসিক হলগুলোর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করা হয়। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মচারী ইউনিয়ন, সাংবাদিক সমিতি, বেরোবি শাখা ছাত্রলীগসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

এছাড়া শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে ভোরে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। সকালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ। অন্যদিকে কেন্দ্রীয় মসজিদে বাদ জোহর সকল শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

কেএস