করোনা সংক্রমণের কারণে গত দুই বছর বই উৎসব হয়নি। করোনা নিয়ন্ত্রণে আসায় রোববার (১ জানুয়ারি) নতুন শিক্ষাবর্ষ-২০২৩ এর প্রথম দিনে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় উৎসব করে শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে পাঠ্যবই তুলে দেয়া হয়। সারা দেশে সব মিলিয়ে প্রায় চার কোটি শিক্ষার্থীকে নতুন বই দেয়া হয় রোববার। এর আগে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। এরই ধারাবাহিকতায় রোববার বই উৎসব পালন করে প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিধন্য ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ রাজধানীর শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় (পূর্বতন নারী শিক্ষা মন্দির)।
প্রতিষ্ঠানটিতে বই উৎসব-২০২৩ এর আনুষ্ঠানিকতায় প্রধান অতিথি ছিলেন র্যাব-১০ এর অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন। সভাপতিত্ব করেন প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির সভাপতি ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন। বই উৎসবের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে দেখা গেছে উৎসাহ-উদ্দীপনা।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে র্যাব-১০ অধিনায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন প্রতিষ্ঠানটির সার্বিক অগ্রগতির বিষয়ে গভর্নিং বডির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিনের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এ প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে কারণে প্রতিষ্ঠানটির প্রতি সবার বিশেষ নজর রয়েছে। সে বিষয়টি মাথায় রেখে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে অদ্যাবধি গভর্নিং বডির সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন শিক্ষাকার্যক্রমসহ সার্বিক কার্যক্রমেই ব্যাপক পরিবর্তন ঘটিয়েছেন।
প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ প্রতিষ্ঠানেরই প্রাক্তন শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীকে তোমরা অনুসরণ করতে পারো। বর্তমান জাতীয় সংসদের স্পীকারও নারী, ওনাকে অনুসরণ করতে পারো। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকেও অনুসরণ করতে পারো।
তিনি আরও বলেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অতীতের চেয়ে এখন অনেক ভালো। এ প্রতিষ্ঠানের সার্বিক পরিবেশ যদিও ভালো, তবুও প্রতিষ্ঠানের আশপাশে বখাটে ছেলেরা আড্ডা দেয়ার তথ্যও শোনা যাচ্ছে। যদি শিক্ষার্থী কিংবা অভিভাবকদের কেউ তাদের দ্বারা ইভটিজিংয়ের শিকার হয় তাহলে কঠোর হস্তে দমন করা হবে। র্যাব-১০ এ বিষয়ে সোচ্চার রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে র্যাব-১০ প্রয়োজনে বিশেষ টহলেরও ব্যবস্থা করবে বলে জানান তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে রিয়াজ উদ্দিন বলেন, শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয় একটি ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ। আমরা আশা করছি খুব শিগগিরই এই প্রতিষ্ঠানকে সরকারিকরণ করতে পারব। যেকোনো সময় এ বিষয়ে ঘোষণা আসবে। আমরা এ প্রতিষ্ঠানকে অত্যাধুনিক করে গড়ে তুলেছি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেছি। অভিভাবকদের ভোগান্তি এড়াতে বেতন-ভাতাসহ সার্বিক কার্যক্রমে ডিজিটালাইজেশন নিশ্চিত করেছি।
এছাড়াও শিক্ষার্থী-অভিভাকদের বিভিন্ন গঠনমূলক পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের সন্তানদের আমাদের হাতে তুলে দিয়েছেন, মানুষের মতো মানুষ করে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের। বই উৎসব অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন শেরে বাংলা বালিকা মহাবিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রদ্যুৎ কুমার ভদ্র। এছাড়া উপস্থিতি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের সব শিক্ষক-শিক্ষিকা, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দ।
টিএইচ