জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা'র দুই বইয়ের 'বগুড়ায় মুক্তিযুদ্ধ' ও 'বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগের রাজনীতি' প্রকাশনা-আলোচনা সম্পন্ন হয়েছে।
বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ৩টায় ইতিহাস বিভাগের এ আর মল্লিক লেকচার হলে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং মোড়ক উন্মোচন হয়।
ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক পিংকি সাহার সঞ্চালনায় প্রকাশক কবি মনিরুল মনির বলেন, এই বই দুটি প্রকাশনা আমরা একটি নির্দিষ্ট দিক বিবেচনায় করছি। বঙ্গবন্ধুর নিজ হতে গড়া ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের ঐতিহ্য কি তা বর্তমানের কাছে একটি মাইলফলক। তার বিস্তারিত বইটিতে উঠে এসেছে।
বইটির লেখক হোসনে আরা বলেন, অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। বিভাগের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন মোড়ক উন্মোচনের সুযোগ প্রদানের জন্য। এরপরে তিনি 'বগুড়ায় মুক্তিযুদ্ধ' বই সম্পর্কে বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে সংগঠিত ৬৩টি গেরিলা যুদ্ধ সম্পর্কে লেখা আছে, এবং সাক্ষাৎকার সহ বিস্তারিত বলা আছে। এর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে।
'বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগের রাজনীতি' বই সম্পর্কে বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল ছাত্রলীগ। এর পাশাপাশি, বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তর এর গণ অভ্যুত্থানে বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগের ভূমিকা কি ছিল, তা উল্লেখ করা আছে। ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু ভূমিকা রেখেছেন, তা উল্লেখ আছে।
অধ্যাপক এ টি এম আতিকুর রহমান বলেন, ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে যে নতুন যগের সূচনা হয়েছে, তার মধ্য দিয়েই ভাষা আন্দোলন, যুক্তফ্রন্ট ইত্যাদি চালিত হয়েছে । একধরনের বিতর্ক তৈরি হয়েছিল যে, বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার বিরুদ্ধে ছিলেন, এর বিপরীতে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে চমৎকার ভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এই বইটি তে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে আবু মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন ভাষার মাসে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে শুরু করেন। তিনি বলেন, আঞ্চলিক ইতিহাস নিয়ে কাজ শুরু করার প্রথমিক দিকে এত সহজ ছিল না। বগুড়ার ইতিহাস বইটি প্রকাশনা করার চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করে লেখিকা যে বইটি প্রকাশিত করতে পেরেছেন, এজন্য তাকে শুভেচ্ছে।
'বঙ্গবন্ধু ও ছাত্রলীগের রাজনীতি' বইটি নিয়ে বলেন, বঙ্গবন্ধুর অধীনে গড়ে উঠা এই দলটি তদের প্রাচীন ঐতিহ্য হারাচ্ছে, স্বাধীনতা চলাকালীন ছাত্রলীগের যে ঐতিহ্য ছিল, তা বর্তমানের নেতৃত্বে এখন সেই ধারা থেকে বহু দূরে আছে। বর্তমানের ছাত্রলীগের রাজনীতি যারা করেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শের আঙ্গিকে নিজেকে গড়ে তুলতে এই বইটি অনেক উপকারে আসবে।
বঙ্গবন্ধুর অসাম্প্রদায়িকতা চিন্তাধারা ধরে না রাখতে পারলে আমরা সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারব না। লেখককে পরবর্তী সংস্করণে বঙ্গবন্ধুর সাথে ছাত্রলীগের যে সভাগুলো হয়েছিলো সেটি তুলে ধরে আদর্শের জায়গাটি ফুটিয়ে তুলবেন।
সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবির বলেন, আঞ্চলিক মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কে যিনি লিখতে পেরেছেন তার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য। এই বইগুলোর উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।
উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, একই দিনে দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন বলে তাকে সাধুবাদ জানাই। 'বগুড়ার ইতিহাস' বইয়ের মতো করে যারা ইতিহাসবিদ আছেন, তারা যদি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে লিখত তাহলে আমরা আজকে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারতাম।
মহান মুক্তিযুদ্ধে ছাত্রলীগের যে ভূমিকা তা এই বইটিতে ফুটে উঠেছে। ছাত্রলীগের প্রকৃত ইতিহাস সম্পর্কে জানতে তরূন পাঠকদের আহবান জানিয়েছেন।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাহিদুল ইসলাম এর সভাপতিত্বে এসময় অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির, ট্রেজারার অধ্যাপক রাশেদা আক্তার, প্রভোস্ট কমিটির সভাপতি আবদুল্লাহ হেল কাফি সহ বিভাগের অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ।
কেএস