জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) কর্মরত এক সাংবাদিককে হেনস্তা ও হুমকির ঘটনায় অভিযুক্ত শাখা কর্মী ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী গাজী মো. শামসুল হুদার বিরুদ্ধে এবার চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত গাজী শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ইব্রাহীম ফরাজীর অনুসারী চাঁদাবাজি করার সময়ের একটি ভিডিও ফুটেজ গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এছাড়াও চাঁদাবাজির ঘটনায় ভুক্তভোগী দোকানদারদের স্বীকারোক্তিমূলক অডিও প্রতিবেদকের হাতে রয়েছে।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বাহাদুর শাহ পার্কের ফুটপাতের বেশ কয়েকটি ফলের দোকানে দোকানদারদের সঙ্গে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির আরেক অনুসারী রবিউল ইসলাম রবির নাম বলে চাঁদার টাকা চাইতে দেখা যায়। রবিউল ইসলাম রবিও সিআইডির প্রশ্ন ফাঁস তালিকার আসামি ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের বাহাদুর শাহ পার্ক সংলগ্ন ফুটপাতে নিয়মিত ৬-৭টি ফলের দোকান বসে। সেসব দোকান থেকে দুইমাস আগে দৈনিক ১৫০ থেকে ২০০ করে প্রতিদিন চাঁদা তুলতো অভিযুক্ত গাজী মো. শামসুল হুদা। দোকানদারদের ভাষ্যমতে বর্তমানে চাঁদার পরিমাণ দৈনিক ২০০ করে নির্ধারিত করা হয়েছে। তবে এখন শামসুল হুদার পরিবর্তে আরেক শিক্ষার্থী দৈনিক এই চাঁদা তুলে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফলের দোকানদার বলেন, ‘এখন তো ২০০ টাকা করে প্রতিদিন নেয়। কিছুদিন আগে যখন নির্ধারিত ছিলো না গাজী নামের একজন এসে ১৫০ কোনোদিন ২০০ করে তুলতো। আমরা ভাবতাম ভেতর থেকে পাঠাইছে তাই আমরাও দিতাম। আর তখন এখানকার লাইনম্যানদের সঙ্গে ঝামেলাও ছিলো।’
ভুক্তভোগী দোকানদারদের অভিযুক্ত গাজী মো. শামসুল হুদার ছবি দেখানো হলে, তারা তাকে চিহ্নিত করেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত গাজী মো. শামসুল হুদাকে ফোন দেয়া হলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজি বলেন, ‘কমিটি হওয়ার আগে ছেলেরা হয়তো কিছু করতো। কিন্তু নতুন কমিটি দেয়ার পর যখন জানতে পারি গাজী এর সঙ্গে জড়িত তখন তাকে ডেকে একদিনে তিনবারও মেরেছি সংশোধন হওয়ার জন্য।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আমি ভিডিও ফুটেজটি দেখেছি। এটি আরও খতিয়ে দেখে বিষয়টি প্রমাণিত হলে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এর আগে গত শুক্রবার শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির অনুসারী গাজী মো. শামসুল হুদার বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন নিয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিকে হেনস্তা ও হুমকি দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।
কেএস