‘শিক্ষার্থীদের জন্য প্রক্টর, প্রক্টরের জন্য শিক্ষার্থী নয়’, ‘যোগ্য ব্যাক্তি থাকার পরও কেন ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর?’, ‘দায়িত্ববান প্রক্টর চাই’, ‘প্রক্টর রানা এক আতঙ্কের নাম’, ‘আমি প্রক্টর, আমি রানা’ এমন বিভিন্ন প্ল্যাকের্ড ও ব্যঙ্গচিত্র হাতে নিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণসহ পাঁচ দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শিক্ষার্থীরা।
রোববার (১২ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক থেকে শুরু করে ব্যবসা শিক্ষা অনুষদ পর্যন্ত রাস্তায় বিভিন্ন বিভাগের অন্তত ৮ শতাধিক শিক্ষার্থী এ মানববন্ধনে অংশ নেয়। শেষে মানববন্ধন কারীরা উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আব্দুল মঈনের কাছে ৬ শতাধিক শিক্ষার্থীর স্বাক্ষরিত একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন।
এতে শিক্ষার্থীরা অছাত্র এবং বহিরাগত হামলাকারীদের গ্রেপ্তার, বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা, আহত শিক্ষার্থী এনায়েত উল্লাহ এবং মো: সালমান চৌধুরীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা প্রদানপূর্বক নিরাপদ ক্যাম্পাস সুনিশ্চিত এবং হামলায় ইন্ধনদাতা হিসেবে বিশ্ববিদ্যায়ের প্রক্টর (ভারপ্রাপ্ত) কাজী ওমর সিদ্দিকীর অপসারণের দাবী জানান।
মানববন্ধনে লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী সাদ্দাম হোসেন বলেন, স্যার আপনি অযোগ্য মানুষ আপনি পদত্যাগ করুন। অন্য কোন প্রক্টরের সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এত সমস্যার সম্মুখীন হয়নি।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী শারমিন মেঘলা বলেন, সম্প্রতি ক্যাম্পাসের বাহিরে সংঘটিত মারধরের ঘটনায় দায় না নিতে পারায় প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাই। বিশ্ববিদ্যালয় একটি মুক্ত চিন্তাধারা একটি স্থান। কিন্তু আমরা মুক্ত চিন্তাধারার প্রতিফলন করতে পারিনি। বিগত কয়েক মাসের ব্যবধানে আমরা দেখতে পাই প্রক্টর স্যারের প্রত্যক্ষ মদদে ক্যাম্পাস বারবার উত্তপ্ত হয়েছে। প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা দায়িত্ব নেওয়ার পর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়েছে। বিগত ৫ বছরে আমাদের ক্যাম্পাস একদিনের জন্যও বন্ধ হয়নি।
একদিকে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারীদের বিচার দাবি এবং প্রক্টরের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক অপ্রপচারের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে কাজী ওমর সিদ্দিকী রানা সমর্থিত শিক্ষকদের একটি পক্ষ। দুপুর ১২ টায় বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের সামনে `বঙ্গবন্ধু পরিষদ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়`র ব্যানারে প্রায় ২০ থেকে ২৫ শিক্ষক মানববন্ধনে অংশ নেন।
মানববন্ধন শিক্ষকেরা দাবি করেন, প্রক্টরের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উসকে দিচ্ছে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির পথে বাঁধা। এছাড়া তারা শিক্ষার্থীর উপর বহিরাগতদের হামলার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।
এসময় নৃবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান আইনুল হক বলেন, আমরা চাই শিক্ষার্থীরা ন্যায় বিচার পাবে। তবে প্রক্টরের বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়া অভিযোগ কাম্য নয়। অপরাধী যে-ই হোক তদন্ত সাপেক্ষে আমরা শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী জানান, আমার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীরা ঢালাওভাবে অভিযোগ করছে। যদি অভিযোগ প্রমাণিত হয় তাহলে আমি পদত্যাগ করব।
তবে এসব বিষয়ে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এফ এম আব্দুল মঈনের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।