রেললাইনে আগুন জ্বালিয়ে রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: মার্চ ১২, ২০২৩, ০৯:৩২ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় দ্বিতীয় দিনেও কোনো সমাধান না পেয়ে ফের রেললাইন আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করছেন শিক্ষার্থীরা। ফলে রাজশাহী রেলস্টেশনের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জের ছাড়া বাকি সব জেলার সঙ্গে রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। রোববার (১২ মার্চ) রাত সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পাশের রেললাইনের দুপাশে আগুন জ্বালিয়ে আন্দোলন করতে থাকে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের বিভিন্ন ব্যানার এনে রেললাইন দু’পাশে আগুন জ্বালিয়ে স্লোগান দিতে থাকেন শিক্ষার্থীরা। চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থীদের হাতের কারুকার্যের মাধ্যমে তৈরি করা বিশাল আকৃতির ময়ূরপাখি এনে আগুন জ্বালাতে দেখা যায় তাদেরকে।

এদিন সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের মূল ফটকে তালা দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থী। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবরোধ করে আন্দোলন করেন।

এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকালের ঘটনায় আমরা এখনো কোনো সুষ্ঠু সমাধান পায়নি। আমার ভাইয়েরা রক্তাক্ত অবস্থায় মেডিক্যালে ভর্তি আছে। আর এদিকে আমাদের প্রশাসন ঘুমন্ত অবস্থায় রয়েছে। আমরা এমন প্রশাসন চাই না। তাদেরকে আমরা অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছি। আমাদের দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত আমাদের এ আন্দোলন চলমান থাকবে বলে জানান তিনি।

এর আগে বেলা ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তারকে প্রায় ২ ঘণ্টা যাবত অবরুদ্ধ করে রাখেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে। এ সময় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার বাস ভবনে পৌঁছে দিয়ে আসেন।

উল্লেখ্য, বাসের ভাড়া নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে শনিবার (১১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর বাজারে স্থানীয়-শিক্ষার্থী ঘটনার সূত্রপাত হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে স্থানীয়রা মহাসড়ক অবরোধ করেন। বর্তমানে মহাসড়কের দু’পাশ থেকে ইটপাটকেল ছোঁড়ে তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে অবস্থান নেয়।

সংঘর্ষে আহত হয়ে প্রায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বগুড়া থেকে একটি বাসে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ নামের এক ছাত্র। যাত্রাপথে ভাড়া নিয়ে তার সঙ্গে বাসের সুপারভাইজার ও হেলপারের বাগবিতণ্ডা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে বাস থেকে কাউন্টারে এসে বিষয়টি নিয়ে কথা বললে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়।এআরএস