যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের নানাবিধ সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ ও সম্প্রতি হলের অনাবাসিক ছাত্রীদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ আখ্যা দেওয়ায় হলটির প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিরিন নিগারকে অপসারণের দাবিতে উপাচার্যের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেছে যবিপ্রবির আবাসিক ও অনাবাসিক ছাত্রীরা।
মঙ্গলবার ( ১৪ মার্চ) দুপুরে যবিপ্রবি উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে উপাচার্যের একান্ত সচিবের নিকট গণস্বাক্ষরসহ স্মারকলিপি প্রদান করে ছাত্রীরা।
স্মারকলিপিতে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার ম্যাডাম প্রভোস্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে ছাত্রীদের মৌলিক অধিকার খর্ব করে বিভিন্ন নোটিশ ও বিধি নিষেধ জারি করেছে। ওই সব বিধি-নিষেধ আমাদের স্বার্থ বিরোধী হিসেবে প্রতীয়মান হয়। প্রভোস্ট ম্যাডাম হলের ডাইনিং সমস্যা, বিশুদ্ধ খাবার পানির সমস্যা, ছাত্রীদের সঙ্গে হলের কর্মচারীদের অসদাচরণ এসব সমস্যা সমাধান করতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। তাছাড়া অনাবাসিক ছাত্রীদের অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে নোটিশে উল্লেখ করেছেন।
আমরা ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ শব্দের স্পষ্ট ব্যাখ্যা পাইনি। এমতাবস্থায় আমরা শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের অনাবাসিক ও আবাসিক ছাত্রীরা, প্রভোস্ট ম্যাডামের অপসারণ দাবি করছি।’
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো: আহসান হাবীব কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
উল্লেখ্য, গত ৭ মার্চ ছাত্রী হল প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শিরিন নিগার অনাবাসিক ছাত্রীদের অনুপ্রবেশকারী আখ্যা দিয়ে ছাত্রী হলে প্রবেশের উপর বিধিনিষেধ আরোপ করেন। তখন হল প্রভোস্ট স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এতদ্বারা যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনাবাসিক ছাত্রীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, হল অফিস ব্যতিত কোন অনাবাসিক ছাত্রী পূর্ব অনুমতি ব্যতিত শেখ হাসিনা ছাত্রী হলের অভ্যন্তরে প্রবেশ করতে পারবে না। এরূপ অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং এরূপ অনুপ্রবেশকারীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আবাসিক ছাত্রীর আবাসিক সিটটিও বাতিল করা হবে।’
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাবাসিক ও আবাসিক শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়, নানারকম আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।
শনিবার (১১ মার্চ) প্রতিবাদের অংশ হিসেবে মানববন্ধন করে যবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা। তার পরিপ্রেক্ষিতে রবিবার( ১২ মার্চ) বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল করে হল প্রশাসন। তবে অনাবাসিক ছাত্রীদের ‘অনুপ্রবেশকারী’ আখ্যা দেওয়ার সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা প্রদান না করায় হল প্রভোস্ট ড. শিরিন নিগারের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিল ছাত্রীরা।
এআরএস