দুই ঘন্টা বাসে আটকে রেখে জবি ছাত্রদল কর্মীকে পেটাল ছাত্রলীগ

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: আগস্ট ২৯, ২০২৩, ০৫:৪৫ পিএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে দুই ঘন্টা আটকে রেখে মারধর করে শাখা ছাত্রলীগ সাধারন সম্পাদক এর অনুসারীরা। আহত ওই শিক্ষার্থী নাম আজিজুল হাকিম আকাশ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের সদস্য।

মারধরের পরে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় অভিযুক্তরাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে চিকিৎসা দিয়ে তাকে পাঠিয়ে দেয়। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় গেটে অবস্থান করা চন্দ্রমূখী বাসে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ছাত্রদল কর্মী আকাশ জানান, আমি ক্লাস শেষ করে ভাষা শহিদ রফিক ভাবন থেকে নামার সময় দুই তিন জন এসে আমাকে প্রোগোজ স্কুলের ভেতরে নিয়ে গিয়ে কিল ঘুষি ও লাথি মারে। এরপর আমি ওখান থেকে পালিয়ে আসার চেষ্টা করলে আমাকে সাত আটজনে ধরে নিয়ে দ্বিতীয় গেটে রাখা চন্দ্রমূখী বাসের ভেতরে নিয়ে যায়।

এরপরই তারা আমাকে বাঁশ ও কাঠের লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে। একপর্যায়ে আমার অবস্থা খারাপ হওয়ায় তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেয়ে দেয়। এখানে মার্কেটিং বিভাগ ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরাফাত ও গনিত বিভাগের হাছান সহ পাঁচ ছয় আমাকে মারধর করে।

এ নিয়ে শাখা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক এসএম আক্তার হোসাইন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশকে যারা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করতে চেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য আবেদন করেছি।

তবে দেশের স্বাধীনতা বিরোধী কোন অপশক্তি যদি ফেসবুক পোস্ট ও ক্যাম্পাসের ভিতর কোন উস্কানিমূলক বক্তব্য প্রদান করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সর্বচ্চ সজাগ অবস্থানে থাকবে৷ আর এসব ঘটনা ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকার কারনেও ঘটতে পারে। যদি তাই হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক মোহাম্মাদ সুজন মোল্লা বলেন, পরীক্ষার হল থেকে, ক্লাস থেকে ধরে নিয়ে আদিম যুগের কায়দায় এ ধরনের হামলা একমাত্র ছাত্রলীগের পক্ষেই সম্ভব। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উচিত ছিল হামলাকারীদের ধরে পুলিশে দেয়া। তারা উল্টো হামলায় আহত হওয়া শিক্ষার্থীকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়ে বেআইনি এবং বিমাতাসূলভ আচরণ করেছেন। আমরা হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছি।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, এ ব্যাপারে আমি এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাই নি। তবে একজন আমাকে ফোন দিয়ে একটা বাসে এক শিক্ষার্থীকে মারধর করার বিষয়টি জানিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গেই আমি একজন সহকারী প্রক্টরকে পাঠিয়ে বাসে তল্লাশি চালিয়েছি। তখন কাউকে পাওয়া যায় নি।

প্রসঙ্গত এর আগেও বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে পরীক্ষা দিতে এসে সাইফুল ইসলাম শাহিন সাইফ, ইমরান হাসান ইমন, মাহিদ সহ অনেকেই ছাত্রলীগের হামলার শিকার হয়েছেন। তারা প্রত্যেকেই ছিলেন শাখা ছাত্রদলের পদধারী। এদিকে এসব হামলার ঘটনায়গুলো নিজেদের অভ্যন্তরীন কোন্দলের জেড়ে সংঘটিত বলে দাবি করছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।

এইচআর