আজ ১১ সেপ্টেম্বর ২৫তম বর্ষে পদার্পণ করলো দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (হাবিপ্রবি)। ১৯৯৯ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এবং
প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও বর্ণিল ও ব্যাপক আয়োজনের মাধ্যমে হাবিপ্রবিতে ২৫তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়েছে। কর্মসূচির শুরুতেই সকাল সাড়ে ৯ টায় প্রশাসনিক ভবনের সম্মুখে জাতীয় পতাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান ও রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান।
পরে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. সাইফুর রহমান, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. মামুনুর রশিদ এবং ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা বিভাগের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. মাহাবুব হোসেন।
পরবর্তীতে ভাইস চ্যান্সেলরের নেতৃত্বে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে একটি বর্ণাঢ্য র্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও এর সামনের মহাসড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় নেচে গেয়ে শিক্ষার্থীরা দিনটি উদযাপন করেন। র্যালি শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্থর চত্বরে বেলুন উড্ডয়ন ও আকাশে শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর মহোদয়। পরবর্তীতে শহীদ মিনারের সম্মুখে দিনব্যাপী ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির উদ্বোধন করেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান।
এ সময় তিনি বলেন, আজ হাবিপ্রবি পরিবারের জন্য একটি আনন্দের দিন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে গড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়কে শিক্ষা ও গবেষণায় এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় আমাদের শিক্ষার্থীদেরকে দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির বিকাশে হাবিপ্রবি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে সেই বিশ্বাস থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন।
আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে আপ্রাণ কাজ করে যাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম কে ভিন্ন মাত্রায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে আমরা নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছি। বিশেষ করে ২০০৯ সালের পরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্বিতীয়বার রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নতি সাধন করা হয়েছে। পাশাপাশি গুণগত ও মানসম্পন্ন শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে আধুনিক কেন্দ্রীয় গবেষণাগার স্থাপিত হয়েছে এবং এখানে মলিকুলার বায়োলজি ইউনিট কাজ করছে। এছাড়াও ডিজিজ ডায়াগনস্টিক ইউনিট, টিস্যু কালচার ইউনিটও পূর্ণ উদ্যমে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, `শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের পাশাপাশি আমরা সহশিক্ষা কার্যক্রমের উপরও গুরুত্ব আরোপ করেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের শুরু থেকে এর বিনির্মাণের সাথে যারা জড়িত ছিলেন আমি তাদের কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করছি। দিনটি উপলক্ষ্যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।
দিনব্যাপী ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং কর্মসূচির উদ্বোধন শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ ও প্রধান গেট সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে “স্মার্ট বাংলাদেশ স্মার্ট ক্রীড়া শৈলীঃ রোলার স্কেটিং প্রদর্শনী” ও অগ্রযাত্রায় হাবিপ্রবির ২৫ বছরে পদার্পণ শিরোনামে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে ফ্ল্যাশ মুভ প্রদর্শিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান। এ সময় বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান উপভোগ করেন।
এছাড়াও ২৫ তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কামনায় বাদ জোহর কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন-১ ও প্রধান গেট সংলগ্ন উন্মুক্ত স্থানে সাংস্কৃতিক নৃত্য গানে অগ্রজ-অনুজদের মধ্যে প্রতিযোগিতা ও ৫ টায় টিএসসি’র সম্মুখস্থ মুক্তমঞ্চে হাবিপ্রবি বিষয়ক তথ্যচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়। এরপর বিকেল ৫.১৫ টায় উক্ত স্থানে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠান গুলো উপভোগ করেন ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এম. কামরুজ্জামান।
এইচআর