নীলফামারীর জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে এইচএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে অর্থ আদায়ের অভিযোগ উঠেছে।
জানা যায়, চলতি বছরে জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রায় ৫শ’ জন শিক্ষার্থী এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। এর মধ্যে রাবেয়া চৌধুরী ডিগ্রি মহাবদ্যিালয় থেকে বিজ্ঞান ও মানবিক বিভাগের ১৩৪ জন, জলঢাকা আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজ থেকে ১৪৪ জন, জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় থেকে শুধুমাত্র বিজ্ঞান বিভাগে ১৭১ জন এবং জলঢাকা মহিলা মহাবিদ্যালয় থেকে মানবিক বিভাগে ১৯ জনসহ মোট ৪৬৮ জনেরও বেশি পরীক্ষার্থীর ব্যবহারিক পরীক্ষা রয়েছে।
এছাড়াও সব পরীক্ষার্থীর তথ্যপ্রযুক্তি (আইসিটি) আবশ্যিক বিষয় রয়েছে। পরীক্ষার সকল খরচ ফরম পূরণের সময় নেওয়া হলেও নিয়মনীতির কোন তোয়াক্কা না করে ব্যবহারিক পরীক্ষায় অর্থ বাণিজ্য করছেন জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
ব্যবহারিক পরীক্ষায় কোন প্রকার রশিদ ছাড়াই বিজ্ঞান বিভাগের পদার্থ, জীববিজ্ঞান, রসায়ন, গণিত ও মানবিক বিভাগের কৃষি, মনোবিজ্ঞান, গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিষয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্য প্রতি বিষয়ে ২০০ টাকা করে আদায় করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক পরীক্ষার্থী জানান, ‘আমরা ব্যবহারিক পরীক্ষার টাকা কমানোর বিষয়ে স্যারদের বলেছিলাম, তবে তারা মানেননি, পরীক্ষায় ফেল হওয়ার ভয়ে বাধ্য হয়েই প্রতি বিষয়ে ২০০ টাকা করে দিয়েছি।’
ব্যবহারিক পরীক্ষার টাকা উত্তোলনের দায়িত্বে থাকা জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক জুলফিকার আলী ভুট্টু বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে ব্যবহারিক পরীক্ষার প্রতি বিষয়ে ২০০ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। আপনি অধ্যক্ষ স্যারের সাথে কথা বলেন।’
এ বিষয়ে জলঢাকা সরকারি ডিগ্রি মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আকবর আলীর বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার চঞ্চল কুমার ভৌমিক বলেন, ‘বোর্ড নির্ধারিত ফি’র বাইরে কোন কলেজ কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ফি নিতে পারেন না, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ময়নুল ইসলাম বলেন, ‘ব্যবহারিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের নিকট থেকে টাকা নেওয়ার বিষয়ে কোন রেজুলেশন হয়নি, বিষয়টি আমি জানি না। অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার বিষয়ে অভিযোগ পেলে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর এস.এম আব্দুল মতিন লস্কর বলেন, ‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
দিনাজপুর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর স. ম. আব্দুস সামাদ আজাদ বলেন, ‘পরীক্ষার সকল খরচ ফরম পূরণের সময়েই নেওয়া হয়েছে, ব্যবহারিক পরীক্ষায় কোন প্রকার অর্থ নিতে পারেন না। বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনকে অবগত করুন।’
এআরএস