আইএইউতে অনিয়মের অভিযোগ, কর্তৃপক্ষের অস্বীকার

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: অক্টোবর ১৮, ২০২৩, ০২:৩১ পিএম

ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইএইউ) কিছু কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের কর্মকর্তাদের একটি অংশের বিরুদ্ধে এ অনিয়মের অভিযোগ বেশ কয়েকটি ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের। সহকর্মীদের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগে বিব্রত সৎ ও দুর্নীতিমুক্ত অন্যান্য কর্মকর্তা। 

জানা গেছে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের বিভিন্ন সেকশন অফিসারের মাধ্যমে অনিয়ম ও দুর্নীতির ঘটনা ঘটছে। পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নির্ধারণে কোনো ‘ফি’ বা অর্র্থ লেনদেনের সুযোগ না থাকলেও সেকশন অফিসারদের মাধ্যমে অর্থ লেনদেন হচ্ছে। ভুক্তভোগী অনেকে এমন পরিস্থিতির শিকার হলেও পরবর্তী ঝামেলা এড়াতে নাম প্রকাশ করতে চাচ্ছেন না। তবে তারা অভিযোগে জানিয়েছেন, কয়েকটি ক্ষেত্রে অবৈধ সুবিধা নেয়ার মাধ্যমে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন সংশ্লিষ্ট কজন কর্মকর্তা। এগুলো হচ্ছে পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নির্ধারণে পয়সা চান কোনো কোনো কর্মকর্তা। চাহিদা অনুযায়ী অর্থ না পাওয়ায় দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালনে অভিজ্ঞদের পরীক্ষক ও প্রধান পরীক্ষক নিয়োগ না দিয়ে অনবিজ্ঞদের নিয়োগ দিচ্ছেন। কামিল ক্লাসের শিক্ষার্থীদের চূড়ান্তপর্বে মৌখিক পরীক্ষা নেয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতিনিধি নিযুক্ত করা হয় কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ বা উপাধ্যক্ষদের মধ্য থেকে। এক্ষেত্রেও অনিয়মের আশ্রয় নেয়ার অভিযোগ রয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে।

অভিযোগে জানা গেছে, মৌখিক পরীক্ষায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি নিযুক্ত করতেও টাকা চাওয়া হয় সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের কাছ থেকে। যিনি টাকা দেন, তিনিই নিযুক্ত হন আর এই অবৈধ প্রক্রিয়ায় সায় না দিলে তিনি বঞ্চিত হন এ সম্মানীয় দায়িত্ব থেকে। এছাড়া পরীক্ষকদের কাছ থেকে নানা বাহানায় অর্থ হাতিয়ে নেয়ার সুযোগ খোঁজেন ওইসব কর্মকর্তা। অসাধু কর্মকর্তাদের এমন কাণ্ডে অনেকে বিরক্ত ও বিব্রত হলেও পরবর্তীতে নানা ধরনের সমস্যায় পড়তে পারেনÑ এমন আশঙ্কা থেকে ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে চান না। 
সেকশন অফিসার আনসারুল ইসলামের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তিনি অনিয়ম ও অবৈধ অর্র্থ গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কিছু এখানে হয় না। পরবর্তীতে তিনি প্রধান পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের মোবাইল ফোন নম্বর দিয়ে এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা বলতে বলেন। 

এদিকে, অনিয়মের এসব অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করেছেন ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক একেএম আখতারুজ্জামান। তিনি বলেন, আমাদের ১৭ হাজারের বেশি পরীক্ষক আছেন। প্রতি বছর সবাইকে সুযোগ দেয়া যায় না। যারা আগে দায়িত্ব পেয়েছেন, তাদের আমরা এবার সুযোগ দিইনি। নতুন পরীক্ষকদের দায়িত্ব দিয়েছি। পরীক্ষার খাতা ডাকযোগে পাঠানোর কোনো সুযোগ নেই বলেও জানান তিনি। তিনি এও জানান, আমরা হাতে হাতে খাতা পাঠিয়েছি। অর্থ গ্রহণের কোনো সুযোগ এখানে নেই। যদি কোনো অভিযোগ থাকে, তার তথ্য-প্রমাণসহ জানাতে বলেন এই কর্মকর্তা। 

এ ব্যাপারে আইএইউর উপাচার্য ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের অন্যায়ের কোনো সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্ট কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে প্রমাণসহ জানান। আমরা অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

আরএস