জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির (আইআইটি) নতুন ভবন নির্মাণ কাজে বৃক্ষ নিধনের প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, জাবি শাখা।
মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বেলা দেড়টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গনিত ও পরিসংখ্যান বিভাগের পেছনে আইআইটি`র নির্মাণাধীন ভবনের পাশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে মোস্তাফিজুর রহমানের সঞ্চালনায় সোহাগী সামিয়া বলেন, `রাজধানী ঢাকা শুধুমাত্র অপরিকল্পিত নগরায়ণের ফলে বসবাসের উপযোগিতা হারিয়েছে। একইভাবে মাস্টারপ্ল্যান ব্যতিত যত্রতত্র ভবন নির্মাণ করা হলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় বসবাসের উপযোগী থাকবে না। তাই আমরা বারবার করে বলেছি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি মাস্টারপ্ল্যান দরকার। এই বিশ্ববিদ্যালয় যদি আরো ১০০টি ভবনের প্রয়োজন হয় তা অবশ্যই নির্মাণ করবে। তবে সেটি হতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী—শিক্ষকদের মতামত নিয়ে যে মাস্টারপ্ল্যান তৈরী হবে তার উপর ভিত্তি করে নির্মাণ করতে হবে।`
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান ধ্রুব বলেন, `পরিবেশকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিদের অভয়ারণ্য হিসেবেই পরিচিত। কিন্তু অপরিকল্পিতভাবে উন্নয়নের নামে যেভাবে পরিবেশকে ধ্বংস করা হচ্ছে তা পরিবেশের জন্য এবং ভবিষ্যতের জন্য এক ভয়াবহ অসনী সংকেত। এই ধ্বংসজজ্ঞ থেকে প্রশাসনকে সরে আসার আহ্বান জানাচ্ছি।`
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের আহ্বায়ক আলিফ মাহমুদ বলেন, `আমরা দীর্ঘদিন যাবত মাস্টার প্ল্যান প্রণয়নের দাবিতে আন্দোলন করে আসছি। প্রশাসন সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজেদের খায়েশ পূরণের জন্য একটি নকশা প্রণয়ন করে বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণ করছে। গাছ কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করার জন্য তারা তৎপর হয়ে উঠেছে। আমরা দীর্ঘদিন যাবত বলেছি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে প্ল্যানার আছে, পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগ আছে, ইউআরপি বিভাগ আছে। শিক্ষকদের নিয়ে কিভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ঠিক রেখে উন্নয়ন করা যায় সে উদ্যোগ নিতে হবে।`
সমাপনী বক্তব্যে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের জাবি শাখার সাধারণ সম্পাদক কনোজ কান্তি রায় বলেন, `পুজোর ছুটির সময় লুকোচুরি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন এই জায়গা থেকে গাছ কেটে ফেলেছে। রাতের আঁধারে গাছ কেটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের উন্মাদ করে দিয়ে ভিন্ন খাতে পরিচালিত করার চেষ্টা করছে। প্রশাসন অস্বীকার করলেও আমরা জানি এই গাছ কাটাগুলো প্রশাসনের মাধ্যমেই হচ্ছে। এখানকার বাস্তুতন্ত্রকে নষ্ট করে শিক্ষার পরিবেশকে ধ্বংস করে প্রশাসন বারবার যেভাবে গাছ কাটার দিকে হাত বাড়াচ্ছে সেটা খুবই ভয়ঙ্কর। আমরা অবিলম্বে মাস্টারপ্যান প্রণয়ন করে পরিকল্পিত উন্নয়নের দাবি জানাচ্ছি৷
এআরএস