সুযোগ পাচ্ছেন প্রাথমিকের নতুন শিক্ষকরাও

অবশেষে জটিলতা কাটলো এটিইও নিয়োগে

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ১০, ২০২৩, ০৭:৩৫ পিএম

১৫৯ জন সহকারী উপজেলা বা থানা শিক্ষা অফিসার (এটিইও) নিয়োগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা কেটেছে। নতুন নিয়োগ পাওয়া প্রাথমিক শিক্ষকরাও এ পদে আবেদন করতে পারবেন। শিগগির শুরু হতে পারে নতুন করে আবেদন গ্রহণ। সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সংশ্লিষ্ট শাখার কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন।

পিএসসি সূত্র জানায়, বুধবার (৮ নভেম্বর) এটিইও পদে নিয়োগে সৃষ্ট জটিলতার বিষয়টি নিয়ে সভা হয়। উচ্চপর্যায়ের মতামতের ভিত্তিতে আবেদন নিয়ে যে জটিলতা ছিল, তা নিরসন হয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নিয়োগ পাওয়া সহকারী শিক্ষকরাও শূন্য পদগুলোতে আবেদন করতে পারবেন।

পিএসসির সংশ্লিষ্ট শাখার একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে  বলেন, ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী- আবেদনের ঘরে দুই বছরের যে অভিজ্ঞতা চাওয়া হয়েছিল, সেটা নিয়ে মূলত জটিলতা। মাঝে অভিজ্ঞতার শর্ত তুলে দেওয়ার পর আবার সেটি যুক্ত করা হয়েছিল। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আবেদনের সময়ে অভিজ্ঞতার ঘরটি সরিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, যেহেতু আলোচনা করে জটিলতা নিরসন হয়ে গেছে, তাই যেকোনো সময় নতুন করে আবেদন গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। যারা আগে আবেদন করেছেন, তাদের নতুন করে আবেদন করার প্রয়োজন হবে না। যারা আবেদন করতে পারেননি, তারা এখন সুযোগ পাবেন। তবে শুধুমাত্র এ বিজ্ঞপ্তির ক্ষেত্রেই কেবল এটি প্রযোজ্য হবে। পরবর্তীতে এটিইও নিয়োগের ক্ষেত্রে নতুন বিধিমালা অনুসরণ করা হবে।

চলতি বছরের ২৬ জুন সমন্বিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পিএসসি। সেখানে ৪০ নম্বর ক্রমিকে ১৫৯ জন এটিইও পদে নিয়োগের জন্য আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন চাওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, বিভাগীয় প্রার্থী বলতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যেকোনো শিক্ষক (অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর) এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। তবে নিচে আবেদন নির্দেশিকায় বলা হয়- এ পদে আবেদনের জন্য প্রাথমিকের শিক্ষকের কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকা লাগবে।

পরে নতুন যোগদান করা শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় যোগাযোগ করতে থাকেন। মন্ত্রণালয় থেকে স্পষ্টভাবে শিক্ষকদের জানানো হয়, নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও এটিইও পদে আবেদন করতে পারবেন। পরে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধিদল মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে লিখিত আবেদন করেন।

১৭ জুলাই মন্ত্রণালয় পিএসসিকে এ বিষয়ে চিঠি দেয়। সেখানে বিদ্যমান বিধিমালা (তৎকালীন বিধিমালা) উল্লেখ করে এটিইও পদে নিয়োগ যোগ্যতার শর্ত সংক্রান্ত জটিলতা অবসান ও বিজ্ঞপ্তি সংশোধনের প্রয়োজন হলে, সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে অনুরোধ করা হয়।

এরপর আবেদন নির্দেশিকা থেকে দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকার বাধ্যবাধকতা তুলে দেয় পিএসসি। ফলে বিভাগীয় কোটায় পূরণযোগ্য ১৫৯ পদে এটিইও নিয়োগে ১ জুলাই থেকে অনলাইনে যে আবেদন শুরু হয়েছিল, তাতে নতুন নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকরাও আবেদন করার সুযোগ পান।

৩১ জুলাই পর্যন্ত এ পদে আবেদন প্রক্রিয়া চলার কথা ছিল। কিন্তু আবেদন চলাকালে ২৪ জুলাই আবারও নিয়মে পরিবর্তন আনে পিএসসি। কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতার ঘর হঠাৎ যুক্ত করা হয়। এতে ফের জটিলতায় পড়েন নতুন শিক্ষকরা। তারা পিএসসি এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ নিয়ে আবারও যোগাযোগ করে অভিযোগ জানাতে থাকেন।

পিএসসির কোনো সাড়া না পেয়ে প্রার্থীরা রিট আবেদন করেন। গত ১৯ অক্টোবর বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও মোহাম্মদ শওকত আলী চৌধুরীর বেঞ্চে ওই রিটের ওপর সর্বশেষ শুনানি হয়। শুনানি শেষে এটিইও নিয়োগে জটিলতা নিরসনে পিএসসিকে পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন হাইকোর্ট। আদালত একমাসের মধ্যে প্রার্থীরা পিএসসিতে যে আবেদন করেছেন, তা নিষ্পত্তি করে বিষয়টি স্পষ্ট করতে বলেছিলেন।

আরএস