জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহা কর্তৃক একই বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের নারী শিক্ষার্থী সৈয়দা সানজানা আহসান ছোঁয়াকে অশোভন ইঙ্গিত, মধ্যরাতে চায়ের দাওয়াতসহ নানা অনৈতিক প্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় হয়রানির ঘটনায় শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলন গড়িয়েছে ষষ্ঠ দিনে।
রবিবার (১০ মার্চ) দুপুরে প্রশাসনিক ভবনে তালা দিয়ে সাজন সাহাকে সাময়িক বহিষ্কার করে তদন্ত সাপেক্ষে দ্রুত বিচারের দাবি জানান তারা।এসময় ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রধান রেজুয়ান আহমেদ শুভ্রকে বিভাগীয় প্রধানের পদ থেকে অপসারণেরও দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এসময় আন্দোলনরত অবস্থায় শিক্ষার্থীরা সাজন সাহার কুশুপুত্তলিকায় জুতার মালা পড়িয়ে স্লোগানে স্লোগানে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন।
অন্যদিকে দুপুর ২ টায় নারী শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের বিচার দাবী ও নিরপরাধ শিক্ষকদের সম্মান হত্যার প্রতিবাদে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগে মানববন্ধন আয়োজন করেন বিভাগটির শিক্ষকরা। এসময় বিভাগটির শিক্ষকবৃন্দ ন্যাক্কারজনক ও ঘৃণ্য এ কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা এবং জড়িতদের দ্রুততম সময়ে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে সম্মিলিতভাবে ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীর পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এসময় শিক্ষকরা আরও বলেন- আমাদের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে পুঁজি করে যারা একের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগের সম্মানহানি করছে তাদের প্রতিও নিন্দা জানাই। মানববন্ধনে বিভাগের শিক্ষার্থীদের সকল একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার আহবান জানান তারা।
এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিয়াশীল সংগঠনগুলো শিক্ষক কর্তৃক নারী শিক্ষার্থী হেনস্তার প্রতিবাদে মুখে কালো পতাকা বেধে মৌন মিছিল এবং মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধনে বক্তারা এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুততম সময়ে শাস্তির দাবি জানায়।
এর আগে গত সোমবার (৪ মার্চ) মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাজন সাহার বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীসহ একাধিক নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেওয়ার স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর থেকেই ধারাবাহিকভাবে আন্দোলন করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পরপর দুটি উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরএস