কোটা সংস্কারের দাবি

জবির ১০৫টি ব্যাচের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা

জবি প্রতিনিধি: প্রকাশিত: জুলাই ৭, ২০২৪, ০৫:১৮ পিএম

প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা বাতিল ও ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে  ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে জগন্নাথ  বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের  শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (০৬ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে।

প্রতিবেদক প্রতিবেদনটি লেখার আগ পর্যন্ত জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতোমধ্যে ৩১টি ডিপার্টমেন্ট এর ১০৫টি ব্যাচ ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে একাত্মতা পোষণ করেছে ।

সেগুলো হলো- গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৪, ১৬, ১৭ ও ১৮), ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), আইন বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), মার্কেটিং বিভাগের ৩টি ব্যাচ(১৬, ১৭, ১৮), দর্শন বিভাগের ২টি ব্যাচ (১৭, ১৮), সমাজকর্ম বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭, ১৮), আইইআর বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৪, ১৬, ১৭ ও ১৮), গণিত বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭, ১৮), রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭, ১৮), ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), আইএমএল বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), ইতিহাস বিভাগের ৫টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), পদার্থবিদ্যা বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭, ১৮), লোক প্রশাসন বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭, ১৮), নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৩রি ব্যাচ (১৬, ১৭ ও ১৮),  হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যাবস্থাপনা বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮), পরিসংখ্যান বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭, ১৮), সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭, ১৮), ইংরেজি বিভাগের ৫টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮), রসায়ন বিভাগের ৫টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮), ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ৫টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭, ১৮), উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭, ১৮), প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭ ও ১৮), অর্থনীতি বিভাগের ২টি ব্যাচ (১৬ ও ১৮), প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ২টি ব্যাচ (১৪ ও ১৮), ফিল্ম এন্ড টেলিভিশন বিভাগের১টি ব্যাচ (১৮), মনোবিজ্ঞান বিভাগের ৩টি ব্যাচ (১৬, ১৭ ও ১৮), থিয়েটার বিভাগের ১টি ব্যাচ (১৮), ফার্মেসি বিভাগের ১টি ব্যাচ (১৮), কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইন্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪টি ব্যাচ (১৫, ১৬, ১৭, ১৮) এবং অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের ৫টি ব্যাচ (১৪, ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮)।

ক্লাস বর্জনকারী ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন,কোটা ব্যবস্থা মেধাবীদের জন্য এক প্রকারের জঘন্য রকমের বৈষম্য।এজন্য আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ক্লাস পরীক্ষায় বসব না সর্বাত্মকভাবে ক্লাস পরীক্ষা আমরা বর্জন করেছি।

ক্লাস বর্জনকারী গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জিলন বলেন, কোটা প্রথা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক এবং অন্যায্য। একজন সুনাগরিক এবং সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে আমরা এটা মেনে নিতে পারি না। অবিলম্বে মুক্তিযোদ্ধা কোটা,পৌষ্য কোটা সহ সকল কোটা বাতিল করে মেধাবীদের সুযোগ করে দেওয়া উচিত।

ক্লাস বর্জনকারী নৃবিজ্ঞান বিভাগের  শিক্ষার্থী মো. ছায়েম সরকার বলেন, কোটার জন্য মেধাবী শিক্ষার্থীদের অবমূল্যায়ন করা হয়।স্বাধীনতার ৫৩ বছরে এসে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলে শিক্ষার্থীদের দাবি শতভাগ যৌক্তিক। এই ৫৩ বছরে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের যথাযথ সম্মান দেয়া হয়েছে। তাদেরকে এই জাতি সব সময় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করবে। তবে চাকরির ক্ষেত্রে তাদের সন্তান-সন্ততি, নাতি-নাতনিদের মুক্তিযোদ্ধা কোটায় চাকরি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়া এখন যৌক্তিক পর্যায়ে পড়ে না। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে যেখানে উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে মেধাবীদের যুক্ত করা প্রয়োজন, সেখানে দেখা যাচ্ছে, কোটা পদ্ধতির কারণে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীরা যুক্ত হওয়ার সুযোগ দেয়া হচ্ছে।তাই আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে মেধাবীদের সুযোগ দিতে হবে এবং কোটা প্রথার অবসান করতে হবে। ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক, মেধাবীরা মুক্তি পাক’।

বিআরইউ