সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে কোটাপদ্ধতিকে সংস্কার করার এক দফা দাবিতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ‘বাংলা ব্লকেড` করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১০ই জুলাই) সকাল ১০ টায় শহরের বিভিন্ন কলেজ থেকে শিক্ষার্থীরা দেওয়ানহাট মোড় সংলগ্ন রেলপথে এসো জড়ো হয়। এরপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাটল-যোগে প্রায় ১৭ কি.মি. পথপাড়ি দিয়ে একইস্থানে এসে জড়ো হোন শিক্ষার্থীরা। সেখানে দুই ঘণ্টাব্যাপী রেলপথ অবরোধ করেন তারা।
এসময় তারা বিভিন্ন সঙ্গীত, স্লোগান ও প্লেকার্ডের মাধ্যমে তাদের দাবি উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদনটি লেখা পর্যন্ত বর্তমানে তারা নগরীর ব্যস্ততম টাইগারপাস মোড়ে `বাংলা ব্লকেড` কর্মসূচি পালন করছেন এবং তারা জানিয়েছেন, সন্ধ্যা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন স্থানে তাদের এই কর্মসূচি চলবে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ`র ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী পুষ্পিতা নাথ জানান, আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানাই। তাদের জন্যই এ দেশ পেয়েছি আমরা। কিন্তু তারা শুধু তাদের সন্তানদের জন্য যুদ্ধ করেননি, সমগ্র জাতির জন্য যুদ্ধ করেছিলেন। মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৫ % করে সকল কোটা ১০% করতে হবে। এরবেশি কোনোভাবেই কাম্য নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন বিভাগের শিক্ষার্থী এইচ এম মিসবাহ বলেন, বাংলাদেশের মতো কোটাপদ্ধতি বিশ্বের অন্য কোন দেশে নেই। এই বৈষম্যমূলক কোটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। একটি চক্র রাষ্ট্রকে মেধাহীন করার পরিকল্পনা করছে। আমরা তাদের বিরুদ্ধেও আন্দোলন করছি। আমাদের দাবি আদায়ে আমরা সীসাঢালা প্রাচীরের ন্যায় অনড়। রাজপথ থেকে কেউ আমাদের নামাতে পারবে না।
চবি শিক্ষার্থী সাদিয়া আকতার জানান, এক দফা দাবি আদায়ে আমরা আন্দোলন করছি। দাবিটি হচ্ছে - `সরকারি চাকরির সকল গ্রেডে অযৌক্তিক এবং বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধান বর্ণিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য ন্যূনতম কোটা রেখে কোটাপদ্ধতি সংস্কার করা।`
তিনি আরো বলেন, আমরা সারাদেশের প্রতিবাদী ছাত্রসমাজ অধিকারের জন্য বেশ কয়েকদিন ধরে সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা আশা করবো সরকার অনতিবিলম্বে আমাদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিবেন।
উল্লেখ্য, `বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন`র প্রধান সমন্বায়ক নাহিদুল ইসলাম গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে আজ সারাদেশে সকাল ১০ টা থেকে সূর্যাস্ত অবধি সড়ক ও রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। তারই ধারাবাহিকতায় আজ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করছেন। শান্তিপূর্ণ ভাবে তারা আন্দোলন করলেও তাদের লাগাতার এ কর্মসূচির কারণে চরম ভোগান্তিতে আছেন সাধারণ মানুষ।
বিআরইউ