জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে যারা স্বৈরাচারের হয়ে প্রত্যক্ষ কাজ করেছে, তাদেরকে উৎসাহিত করেছে তাদের আমি ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না। আমি এদের ভাইস-চ্যান্সেলর হতে চাই না। আমরা যারা দায়িত্বে আছি তারা আইনে বাধা। চাইলেও আমরা সবকিছু করতে পারি না। সবাইকে একসাথে চলতে হবে, স্বৈরাচারকে ঠেকাতে হবে এবং সবাই মিলে সফলতা অর্জন করতে হবে।
বুধবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার আন্দোলনের বিভিন্ন ব্যাচ ও বিভাগ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
হল ও আবাসন সংকটের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমাদের হল নেই। এখানে ভিসি ভবনও নাই। আমি কোথায় থাকব তারও ঠিক নেই। আমি তো ক্যাম্পাসেই থাকতে চাই। কিন্তু এখানে থাকার জায়গা নাই। নতুন ক্যাম্পাসে টেম্পরারি থাকার ব্যবস্থা করা যায় কিনা সেটাও আমি ভাবছি। দশ হাজার শিক্ষার্থীর থাকার ব্যবস্থা করা সহজ কিছু নয়। যা ১৯ বছরে হয়নি তা এক মাসে হয়তো হবে না। তবে আমরা অগ্রগতি জানাবো। আমি তোমাদের ভিসি। আমরা সবাই মিলে সফল হবো।
উপাচার্য রেজাউল করিম আরও বলেন, আমাদের অডিটোরিয়ামে এসি সব নষ্ট। খোঁজ নিয়ে দেখলাম আমি যে সময়ে৷ বাসার এসি কিনেছি তা কবে নষ্ট হবে তার ঠিক নেই, কিন্তু এখানের সব এসি নষ্ট। আমরা জিরোতেও নাই, আমরা অলরেডি মাইনাসে আছি। কারণ এই এসি লাগাতে হলে আগে নষ্টগুলো সরাতে হবে। ভবনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ, নতুন ভবন করতে হলে এগুলো ভাঙতে হবে। তখন শিক্ষার্থীরা ক্লাস করবে কোথায়? এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এখন তার নামফলকও নাই। সেগুলো পুনঃস্থাপন হবে। এসব নিয়ে আমরা কাজ করছি।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমি মাস্টার প্ল্যান নিয়ে আলোচনা করেছি। কনসালট্যান্টের নিয়োগ দিয়ে সাথে সাথে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর হাতে হস্তান্তরের কাজ করা হবে। আমি ক্যাম্পাসের কাজের মেয়াদ নিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ও সচিবের সঙ্গে দেখা করেছি, তাদের বলেছি কাজ সময়মতো হয়নি, টাইমটা যেন আরেকটু বাড়ানো হয়। তারা বলেছেন সময়টা বাড়ানো হবে।ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, যাদের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আমি বলেছি ছাত্র রাজনীতি বন্ধ হবে না কিন্তু ছাত্ররাজনীতির কালচার চেঞ্জ হবে। লেজুড়বৃত্তিক ছাত্ররাজনীতি চলবে না। জকসু যতদ্রুত সম্ভব তত দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে। তাহলে আমাদের একটা স্পেসিফিক উইন্ডো হবে যেটা নিয়ে আমরা কাজ করতে পারব।
সমাবর্তনের বিষয়ে উপাচার্য বলেন, আমরা সবাই চাই সমাবর্তিন হোক। আমি ভাবছি নেক্সট কনভোকেশন নতুন ক্যাম্পাসে করতে পারি কিনা। একটা সমাবর্তনের প্রস্ততি নিতেই এক বছর চলে যায়। ততদিনে গ্রাউন্ড ওয়ার্ক করতে পারলে ওখানেই করব। এছাড়া ধুপখোলা মাঠে লিগ্যাল রাইট দেয়ার আমাদের দেয়ার কথা আছে, দেয়া হলেই ওখানে আমাদের স্থায়ী কিছু করা হবে। লিগ্যালভাবে একবার যদি বসতে পারি তাহলে বাকিটা আমরা দেখে নেবো।
এ সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহা. তাজাম্মুল হক এবং পরিচালক (ছাত্রকল্যাণ) ড. কে. এ. এম. রিফাত হাসানসহ সহ বিভিন্ন বিভাগ ও ব্যাচ প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
ইএইচ