জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনকে নিয়ে ‘দৈনিক সংবাদ’ পত্রিকায় মিথ্যা ও মনগড়া প্রতিবেদন প্রকাশের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের দশটি সাংস্কৃতিক সংগঠন।
শুক্রবার সংগঠনগুলোর নিজস্ব প্যাডে পৃথকভাবে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
এ ধরনের অপব্যাখ্যামূলক প্রতিবেদন প্রকাশের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে বলেও দাবি করা হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিদানকারী সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ হলো- জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাব, জবি আবৃত্তি সংসদ, ফটোগ্রাফিক সোসাইটি, মাইম সোসাইটি, সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, জবি আইটি সোসাইটি, হিউম্যান রাইটস সোসাইটি, জবি সংস্কার আন্দোলন ও বাঁধন।
সাংবাদিক সমিতির প্রতিবাদ বিবৃতিতে বলা হয়, বৃহস্পতিবার দৈনিক সংবাদ পত্রিকার অনলাইনে এবং শুক্রবার প্রিন্ট সংস্করণের শেষ পাতায় মাহমুদ তানজীদের (জবি প্রতিবেদক) নাম উল্লেখ করে `জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় গোপনেই সব দখলে নিতে মরিয়া শিবির` শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রতিবেদন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যেখানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি নিয়ে শিবির সংশ্লিষ্ট মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিবেদনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সকল সাংবাদিকদের `শিবির পন্থি` সাংবাদিক হিসেবে মিথ্যা আখ্যা দেয়া হয়েছে এবং শিবিরন্থী সাংবাদিকরা সমিতির তালা ভেঙে কার্যালয় দখল করেছে- এমন মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হয়েছে, যার কোনো ভিত্তি নেই।
জবি প্রেসক্লাবের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রতিবেদনে অবকাশ ভবনে অবস্থিত সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও জবি প্রেসক্লাবের নাম উল্লেখ সহ সকল সাংবাদিক সংগঠনের নাম উল্লেখ করে শিবির সংশ্লিষ্টতা এবং এ বিষয়ে নানান অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে, যা সকল সদস্যদের জন্য মানহানিকর। এবং সংগঠনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে।
এছাড়া শিবির কিংবা সমতুল্য গুপ্ত রাজনীতির কোন সংশ্লিষ্টতা নেই জানিয়ে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে অন্যান্য সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহ।
জবি সংস্কার আন্দোলনের বিভিন্ন বিভাগের ২২ জন প্রতিনিধি জানিয়েছে, সংবাদে জবি সংস্কার আন্দোলনকে রাজনৈতিক দলের ছাত্র সংগঠন `শিবির` এর গঠিত বলে নানান অপব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। জবি সংস্কার আন্দোলন গঠিত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি বিভাগ থেকে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে। জবি সংস্কার আন্দোলনের প্রতিনিধিগণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রথমে নিজ ব্যাচ ও পরে তার বিভাগের বাকি ব্যাচ প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত। তারা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংস্কার বিষয়ে কাজ করছে। এই অপবাদ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংস্কার কাজের জন্য নির্বাচিত প্রতিনিধিদের জন্য অত্যন্ত মানহানিকর।
তবে বিতর্কিত সংবাদে বক্তব্য প্রদানের ব্যাপারে জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি এবং সাংবাদিকদের অন্যান্য সংগঠনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে কখনো কোন রকম বক্তব্য দেইনি। আমার এবং আমার সংগঠনের কাছে সাংবাদিকরা হচ্ছেন অত্যন্ত সম্মানের।
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. কে এ এম রিফাত হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন সমূহের ব্যাপারে আমার নাম উদ্ধৃতি দিয়ে যে সকল বক্তব্য দেওয়া হয়েছে তা মিথ্যা। ঐ সাংবাদিক আমাকে শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের কনসার্ট আয়োজনের ব্যাপারে জানতে চেয়েছিল। কনসার্টে কোনো গুপ্ত সংগঠন বাঁধা সৃষ্টি করছে কিনা জানতে চেয়েছিল। অবকাশ ভবনের কোনো সংগঠনের ব্যাপার তিনি জানতে চাননি।
এখন কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে কোরো অভিযোগ পাই নি। পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হোসেন বলেন, নিউজের বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি।
ইএইচ