বিদেশি শিক্ষার্থী টানতে উদ্যোগহীন শাবিপ্রবি

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২৪, ০৪:০৯ পিএম

টানা ছয়টি শিক্ষাবর্ষে একটিও বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারেনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে যাওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন শিক্ষকরা।

বিদেশি শিক্ষার্থী টানার জন্য কার্যকর কোনো উদ্যোগ না থাকায় এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৩-০৪ থেকে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ১৫ জন বিদেশি শিক্ষার্থী শাবিপ্রবিতে পড়াশোনা করেছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন নেপালের, চারজন সংযুক্ত আরব আমিরাতের এবং একজন ফিনল্যান্ডের। তবে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষ থেকে শুরু করে বর্তমানে ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষ পর্যন্ত ছয়টি ব্যাচে কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী নেই। চলতি শিক্ষাবর্ষে কোনো বিদেশি আবেদনকারীও পাওয়া যায়নি।

শাবিপ্রবির ভর্তি বিষয়ক ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য কিছু নির্দিষ্ট শর্তাবলি নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে উল্লেখ আছে, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীকে ১২তম গ্রেড, এ লেভেল, বা উচ্চমাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষা উত্তীর্ণ হতে হবে এবং এসএটি পরীক্ষায় ন্যূনতম ৭০০ স্কোর করতে হবে। ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় নথিপত্রের মধ্যে রয়েছে পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, নাগরিকত্বের সনদ, উচ্চমাধ্যমিক সমমানের পরীক্ষার পাসের সনদ এবং এসএটি স্কোরের সনদ। এসব দলিল জমা দেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নির্ধারিত একটি আলাদা ইমেইল ঠিকানা রয়েছে। তবে, গত কয়েক বছর ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের মধ্যে শাবিপ্রবিতে ভর্তির আগ্রহ তেমন দেখা যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাংকিং ও আন্তর্জাতিকতা বাড়ানোর জন্য বিদেশি শিক্ষার্থী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধু প্রতিষ্ঠানকে বহির্বিশ্বে পরিচিত করে তোলে না, বরং শিক্ষার্থীদের মধ্যেও বৈচিত্র্যের সুযোগ তৈরি করে। এজন্য ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদ ও প্রচারণা বৃদ্ধির পরামর্শ দেন তিনি।

সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক শাহ মো. আতিকুল হক মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসন, ফান্ডিং বা স্কলারশিপ এবং খণ্ডকালীন চাকরির সুযোগ তৈরি করলে বিদেশি শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করা সম্ভব হবে। তিনি একটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ক দপ্তর স্থাপনের গুরুত্বও তুলে ধরেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সরওয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সেশনজট নিরসনের কাজ প্রাথমিকভাবে অগ্রাধিকার পেলেও শীঘ্রই বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, পার্শ্ববর্তী দেশগুলো থেকে শিক্ষার্থীরা শাবিপ্রবিতে পড়তে আসবেন।

ইএইচ