জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

ভিডিও করায় সাংবাদিকের উপর ছাত্রদল নেতার হামলা

জবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২৪, ১১:২৭ এএম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে শিক্ষার্থীদের মারামারির ভিডিও করায় সাংবাদিককে মারধর করেছে শাখা ছাত্রদলের এক নেতা। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা হলেন, গণিত বিভাগের ২০২-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মাসফিকুল রেইন। তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং সাধারণ সম্পাদক সুজন মোল্লার অনুসারী।

অন্যদিকে ভুক্তভোগী সাংবাদিক হলেন, দৈনিক কালের কণ্ঠে‍‍’র জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি মো. জুনায়েত শেখ।

রোববার (১৭ নভেম্বর) বিকাল পৌনে চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব পাশে এই ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, ফুটবল খেলাকে কেন্দ্র করে ইংরেজি ও গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীদের মারামারি হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠ ধূপখোলা মাঠে। পরে তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে ফের মারামারি বাঁধে। এ ভিডিও করতে গেলে শাখা ছাত্রদলের কয়েকজন নেতা-কর্মী সাংবাদিকের উপর অতর্কিত হামলা করে এবং ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ভুক্তভোগী সাংবাদিক বলেন, ভিডিও মোবাইলে ধারণ করতে গেলে প্রথমে বাঁধা দেন শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন। তিনি পরিচয় জিজ্ঞেস করেন। আমি নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেই। গণিত বিভাগের ১৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী আমিনুল ইসলাম আলিফ আমাকে বারবার বলেছে তুমি কে, তুমি কে? পরে আমাকে বুকে আঘাত করেন গণিত বিভাগের মাসফিকুল রাইন। প্রথমে তাঁকে আমি চিনতে পারি নি। পরবর্তীতে ছবি ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখে নিশ্চিত হয়েছি।

তিনি আরও বলেন, আমি ভাস্কর্য চত্বরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। দেখতে পাই ক্যাফেটেরিয়ার পূর্ব দিকে মারামারি হচ্ছে। আমি ফোন দিয়ে ভিডিও করতে শুরু করি। এ সময় চার পাঁচ জন কেন আমি ভিডিও করছি জিজ্ঞেস করে। আমি সাংবাদিক পরিচয় দেই।

পরে তারা বলেন, তুই কে? তুই কিসের সাংবাদিক! ভিডিও কেন করবি? বলে ফোন ছিনিয়ে নিতে যায়। বাঁধা দিলে তাঁদের কয়েকজন আমার বুকে আঘাত করে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত মাসফিকুল রাইন বলেন, আমরা ক্যাফেটেরিয়ার পাশ দিয়ে আসছিলাম, দেখতেছি গ্যাঞ্জাম হচ্ছে। তখন দেখি একজন মোবাইল ফোন দিয়ে ভিডিও করতেছে। তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে সে নিজেকে কালের কণ্ঠের রিপোর্টার বলে জানায়। প্রয়োজনে আপনি আমাকে তার নাম্বার দেন, তাকে ফোন দিয়ে সরি বলে নিবো আমি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শাখা ছাত্রদলের দপ্তর সম্পাদক পরাগ হোসেন বলেন, আমি সেখানে হামলা ঠেকিয়েছি। আমি হাত দিয়ে সবাইকে সরিয়ে দিচ্ছিলাম। সেখানে গণিত বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিল।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সেক্রেটারি সুজন মোল্লা বলেন, ভিডিও ফুটেজ দেখে বোঝার উপায় নেই কারা গায়ে তুলেছে।  আমরা শনাক্ত করতে পারছি না। আমাদের সঙ্গে সাংবাদিকদের কোনো খারাপ সম্পর্ক নেই। করতেও চাই না।

জবি ছাত্রদলের সভাপতি আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। শুধু সাংবাদিক নয়, কোন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা হলেও আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। কে হামলা করেছে, তার পরিচয় শনাক্ত করা গেলে আমরা সাংগঠনিকভাবে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিবো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিআরইউ