আন্দোলনে হামলার অভিযোগে কুবি কর্মকর্তা জাকিরকে গ্রেফতার

কুবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৫, ০৮:৩১ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) মোহাম্মদ জাকির হোসেন নামে এক কর্মকর্তাকে  আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে শিক্ষার্থীরা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা পরিষদের সর্বশেষ কমিটির সভাপতি ছিলেন।

সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকাল ৫ টার দিকে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবন থেকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা।

জানা যায়, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন ছাড়াও মোহাম্মদ জাকির হোসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের ডেপুটি রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর হামলার ঘটনায় তার নামে একটি মামলাও রয়েছে। ঐ মামলায় ১১ নাম্বার আসামি তিনি।

এছাড়াও বিগত সরকারের আমলে শিক্ষকদের মারতে তেড়ে যাওয়া, নথি জালিয়াতিসহ আরও কয়েকটি কারণে গত বছরের ৫ই জুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫ তম সিন্ডিকেটে তাকে চাকরি থেকে ওএসডি করা হয়।

আটকে নেতৃত্ব দেয়া কুবি শিক্ষার্থী হান্নান রহিম বলেন,  আন্দোলন চলাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেজন্য তার নামে একটি মামলাও দেয়া হয়েছে। এছাড়া বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তিনি লাঞ্ছিত করেছেন। শিক্ষকদেরকে মারতেও তেড়ে গেছেন। সবমিলিয়ে তাকে নিয়ে অনেক অভিযোগই ছিলো, যার প্রেক্ষিতে আজকে আমরা তাকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিই।

কোটবাড়ি পুলিশ ফাঁড়ির এসআই লিটন চাকমা বলেন, ডিবি (পুলিশের গোয়েন্দা শাখা) থেকে আমাদের বলা হয়েছে তাকে গ্রেফতার করার জন্য। তবে কোন মামলায় আটক করা হয়েছে আমরা তা বলতে পারবো না। এখান থেকে নিয়েই আমরা তাকে ডিবিতে হস্তান্তর করবো।

প্রসঙ্গত, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে নথি জালিয়াতি, সহকর্মী ও কর্মচারীদের সাথে অসদাচরণ, হেনস্তা ও গালমন্দ, জামাত-শিবির ট্যাগ লাগিয়ে হয়রানি, বিভিন্ন নিয়োগ ও টেন্ডার বাণিজ্যের সাথে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে ডেপুটি রেজিস্ট্রার জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে।

এছাড়াও, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষককে হেনস্তা ও লাঞ্ছিত করতে ঔদ্ধত্য হয়ে এগিয়ে যান এই কর্মকর্তা। ২০১৪ সালে নৃবিজ্ঞান বিভাগের একজন শিক্ষককে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করেন জাকির। ২০২২ সালে জাকিরের দ্বারা ইংরেজি বিভাগের আরেক শিক্ষক অপমানিত ও হেনস্তা হয়। একই বছরের জানুয়ারি মাসে জাকিরের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারের কক্ষে তালা দিয়ে তৎকালীন রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। সর্বশেষ ২০২৪ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যের কক্ষে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত নেতাদের থাপড়িয়ে দাঁত ফেলে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন জাকির। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরিও করা হয়।

আরএস