রাবিতে পবিত্র কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় গ্রেপ্তার ১

রাবি প্রতিনিধি প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৪, ২০২৫, ১১:০৮ পিএম

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের আবাসিক হল ও কেন্দ্রীয় মসজিদে অর্ধ পোড়ানো কোরআন শরীফ পোড়ানো উদ্ধারের ঘটনার ‘মূলহোতা’ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের সাইবার ক্রাইম ইউনিট।

তবে, তিনি মানসিকভাবে অসুস্থ ও বেশ কয়েকবার চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেল ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।

আটক হওয়া রাবি শিক্ষার্থী ফেরদৌস রহমান ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ও ময়মনসিংহ জেলার ভালুকা থানার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের মো. মজিবর রহমানের ছেলে।

গণমাধ্যমে পাঠানো আরএমপির বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‍‍`কোরআন পোড়ানোর ঘটনার পর সে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল থেকে পালিয়ে যায় এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জ, যশোর, ঢাকা ও ময়মনসিংহের বিভিন্ন এলাকায় আত্মগোপন করে থাকে।‍‍`

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্ত ফেরদৌস রহমান ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল ও মসজিদে কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনার সাথে নিজের সংশ্লিষ্টতা স্বীকার করে। অভিযুক্ত ফরিদের বক্তব্যসহ অন্যান্য বিষয়ে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

অভিযুক্ত ফেরদৌসের স্বীকারোক্তি ও তার মানসিক সমস্যার কথা নিশ্চিত করে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‍‍`অভিযুক্ত একাই এ কাজ করেছেন ও তার মানসিক সমস্যার কথা জানিয়ে পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন।‍‍`

বিজ্ঞপ্তিতে মামলার তদন্তের বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ‍‍`বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মামলা রুজু পরবর্তীতে নগরীর মতিহার থানা পুলিশের পাশাপাশি আরএমপি সিটিটিসি এবং সাইবার ক্রাইম ইউনিট একটি চৌকস টিম মামলাটির তদন্ত কাজ শুরু করে। তদন্তের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট স্থানগুলোর সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে কোরআন শরীফ পোড়ানোর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়। পরে আরএমপি সিটিটিসি বিভাগ ও সাইবার ক্রাইম ইউনিটের একটি সমন্বিত অভিযানিক দল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) সহায়তায় ফেরদৌস রহমানকে ময়মনসিংহের ভালুকা থানার ডাকাতিয়া ইউনিয়নের তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে।‍‍`

গ্রেপ্তার ফেরদৌস রহমান ফরিদ মানসিকভাবে অসুস্থ থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ও এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান।

তিনি বলেন, আমাদের কমিটির তদন্তে উঠে আসা তথ্য গোয়েন্দা সংস্থা ও পুলিশকে দেওয়া হয়। তারা ওই শিক্ষার্থীকে নজরদারিতে রাখেন। সর্বশেষ তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া ওই শিক্ষার্থীর রাজনৈতিক কোনো সংশ্লিষ্টতা আমরা তদন্তে পাইনি। তবে, তিনি মানসিক অসুস্থতার তথ্য পাওয়া গেছে। এমনকি তিনি মানসিক সমস্যার জন্য ঢাকায় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে ভর্তিও ছিলেন।

এদিকে ফেরদৌসের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ হাসান নকীব ফেসবুকে তার ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে আজ দুপুরে লিখেন, ‍‍`রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে পবিত্র কুরআন শরিফে অগ্নিসংযোগ ঘটনার মূল সন্দেহভাজন এখন পুলিশ কাস্টোডিতে। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীদের সহযোগিতা ছাড়া ঘটনা ঘটার ৪৮ ঘণ্টার ভেতর আমাদের তদন্ত কমিটি সন্দেহভাজন শনাক্ত করতে পারত না।

ইএইচ