পহেলা বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দকে বরণ করে নিতে প্রথমবারের মতো বৈশাখী মেলা এবং বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। নানা আয়োজন, রঙিন সাজসজ্জা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় দিনটি উদযাপন করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় চারুকলা অনুষদের উদ্যোগে শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।
শোভাযাত্রাটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে শুরু হয়ে রায়সাহেব বাজারের ঐতিহাসিক ভিক্টোরিয়া পার্ক ঘুরে আবার ক্যাম্পাসে ফিরে আসে। এবারের শোভাযাত্রার মূল থিম ছিল ‘বাংলার ঐতিহ্যবাহী গ্রামীণ সংস্কৃতি’। শোভাযাত্রায় দেখা যায় গরুর গাড়ি, পাখি, পশু, ফুলের প্রতিকৃতি এবং নানা গ্রামীণ উপকরণ।
শোভাযাত্রা শেষে বিজ্ঞান অনুষদ প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম।
তিনি বলেন, “এমন আয়োজন বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি চর্চা এবং শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা বিকাশে অনন্য ভূমিকা রাখবে।”
শোভাযাত্রার পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হচ্ছে দিনব্যাপী বৈশাখী মেলা ও প্রকাশনা উৎসব। মেলার স্টলগুলো বিজ্ঞান অনুষদ, মুক্তমঞ্চ এবং রফিক ভবনের নিচে বসানো হয়েছে। স্টলগুলোতে হস্তশিল্প, গ্রামীণ খেলনা, পিঠা-পুলি, গয়না, প্রকাশনা সামগ্রীসহ নানা ঐতিহ্যবাহী পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
সাংস্কৃতিক আয়োজনের অংশ হিসেবে আয়োজন করা হয়েছে সংগীতানুষ্ঠান, নৃত্য, আবৃত্তি এবং বিশেষভাবে পরিবেশিত হচ্ছে জনপ্রিয় পালা নাটক ‘ভেলুয়া সুন্দরী’। এতে অংশ নিচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও অতিথি শিল্পীরা।
বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে ব্যান্ড কনসার্ট। এতে অংশ নিচ্ছে জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘অ্যাশেজ’। এছাড়া ক্যাম্পাসের বাইরের ব্যান্ড ‘চান্দের গাড়ি’ এবং ‘মেটাল ইরর’-এর পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যান্ড মিউজিক অ্যাসোসিয়েশন-এর ব্যান্ড ‘কিম্ভূত’, ‘কোমল গান্ধার’, ‘অফসাইড’ এবং একাধিক একক শিল্পী পরিবেশনায় অংশ নেবেন।
কনসার্ট আয়োজনের সহযোগিতায় রয়েছে এয়ারটেল, যারা মঞ্চসজ্জা এবং আয়োজন ব্যবস্থাপনায় সহায়তা প্রদান করেছে। বিজ্ঞান অনুষদের মাঠে নির্মিত বিশেষ মঞ্চে এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
“বিপ্লবের সিঁড়ি বেয়ে আসুক নেমে আলো, নববর্ষে মুক্ত জীবন থাকুক আরো ভালো”— এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৈশাখী আয়োজনটি সাজানো হয়েছে।
পুরো আয়োজনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ছিল উৎসবমুখর। শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সরব উপস্থিতি ও অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।
ইএইচ