২০২১ সালে মরণোত্তর দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন পশ্চিবঙ্গের প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। তবে সম্প্রতি এই গায়ক জানালেন, সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন তিনি। মরণোত্তর দেহদান নয় বরং ইসলামী রীতিতে নিজের মরদেহ দাফনের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন এই গায়ক।
বুধবার (৫ মার্চ) নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তিনি।
কবীর সুমন তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘রমজান মোবারক! সকলকে জানাতে চাই, বছরখানেক আগে এই ফেসবুকেই ঘোষণা করেছিলাম—আমি আমার দেহ দান করেছি, কোনো ধর্মীয় শেষকৃত্য চাই না। অনেক ভেবে আমি সেই সিদ্ধান্ত পাল্টালাম। দেহদানের ইচ্ছে প্রত্যাহার করছি আমি। আমার দেহ আমি দান করব না।’
এই গায়কের ইচ্ছে, কলকাতার মাটিতেই যেন তার দাফনকার্য সম্পন্ন হয়। তিনি লেখেন, ‘আমি চাই আমাকে এই কলকাতারই মাটিতে, সম্ভব হলে গোবরায়, ইসলামী রীতিতে কবর দেওয়া হোক। এটাই আমার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত। আমার কতিপয় স্বজনকে এটা জানিয়ে দিলাম।’
সবশেষে কবীর সুমন লিখেছেন, ‘আমার এই ঘোষণার বিষয়ে কারোর কোনো মত বা মন্তব্য চাই না। সকলের ওপর শান্তি বর্ষিত হোক।’
স্বাভাবিকভাবেই কবীর সুমনের এই পোস্ট ভাইরাল হতেই অনুরাগীরা তাঁর শেষ ইচ্ছেকে সমর্থন জানিয়েছেন।
বছরখানেক আগে দেহদানের কথা ঘোষণা করে এক ফেসবুক পোস্টে কবীর সুমন লিখেছিলেন, ‘আমার মৃতদেহ যেন দান করা হয় চিকিৎসাবিজ্ঞানের কাজে। কোনো স্মরণসভা, শোকসভা, প্রার্থনাসভা যেন না হয়।’
নব্বইয়ের দশকে সুমন চট্টোপাধ্যায়ের ‘তোমাকে চাই’ অ্যালবাম রীতিমতো ঝড় তুলে দেয়। পরবর্তীতে বাংলাদেশের সঙ্গীতশিল্পী সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে সংসার বাঁধার আগে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন সুমন। তারপর থেকেই সুমনের নামের আগে যুক্ত হয় ‘কবীর’ শব্দটি। এবার তিনি মরণোত্তর শেষ ইচ্ছের কথা জানালেন।
মাসখানেক ধরেই বার্ধক্যজনিত কারণে শারীরিকভাবে অসুস্থ কবীর সুমন। জানা গিয়েছে, বিছানা থেকে বাথরুম যাওয়া কিংবা সিঁড়ি দিয়ে হাঁটাচলা করার সময়েও লাঠির সাহায্য নিতে হয় তাঁকে। চিকিৎসকদের কড়া পরামর্শ, কাউকে না কাউকে সঙ্গে থাকতে হবে সবসময়। এমতাবস্থায় রোজ কোনও না কোনও ছাত্র-ছাত্রী পালা করে থাকেন সুমনের সঙ্গে। তবে শারীরিকভাবে তিনি অসুস্থ হলেও মনেপ্রাণে চিরতরুণ কবীর সুমন।
আরএস