স্বাস্থ্যমন্ত্রী

সবাই একসাথে কাজ করলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা উন্নত হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: জুলাই ১০, ২০২৪, ০৮:০২ পিএম

স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন বলেছেন, বাংলাদেশের চিকিৎসকদের মান পৃথিবীর কোন দেশের তুলনায় কম না। অনেক ভালো ভালো চিকিৎসক বাংলাদেশে আছে। তারা ভালো চিকিৎসা দিতে পারবে। তবে আমাদের যথার্থ ফ্যাসিলিটিসহ অনেক কিছুর অভাব আছে আছে যার কারণে পারি না। আমরা যদি সবাই মিলে একসাথে কাজ করতে করি তাহলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব।

বুধবার (১০ জুলাই) মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলায় স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পসমূহ পরিদর্শন করেন। প্রকল্পসমূহের মধ্যে রয়েছে ইলিয়াস আহমেদ চৌধুরী ট্রমা সেন্টার, শিবচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যা থেকে ১০০ শয্যা উন্নীতকরণ প্রকল্প, শেখ হাসিনা ইনিস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি নির্মাণ প্রকল্প। এর পাশাপাশি স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন শিবচর ডায়াবেটিক সমিতি এবং উত্তর তাজপুর কমিউনিটি ক্লিনিক পরিদর্শন করেন। শেখ হাসিনা ইনিস্টিউট অব হেলথ টেকনোলজি নির্মাণ প্রকল্প পরিদর্শন শেষে দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন উক্ত ইনিস্টিউটের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় তার বক্তব্যে একথা বলেন।

উক্ত মতবিনিময় সভায় তিনি আরো বলেন, আমি বঙ্গবন্ধু আর তার পরিবারের সবার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধরে রাখার জন্য এখানকার চীফ মহোদয় হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী যে কাজগুলো  করেছেন, যে সব স্থাপনা আর ভাস্কর্য স্থাপন করেছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি গত সপ্তাহে চট্টগ্রাম গিয়েছি। আগামী শনিবার আমি নর্থ বেঙ্গল যাব। ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, নীলফামারী। আমি এখানে এসে যা দেখলাম তাতে আমি চীফ হুইপ মহোদয়কে ধন্যবাদ জানাই। উনি শিবচরকে পুরো বাংলাদেশে একটি মডেল হিসেবে সৃষ্টি করেছেন।

স্বাস্থ্যে টেকনেশিয়ানের গুরুত্ব সম্পর্কে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে অর্ধেক রোগী বিদেশে যায় রোগের যথাযথ ইনভেস্টিগেশন হয় না দেখে। তারা দেখে এক জায়গায় এক রিপোর্ট, আরেক জায়গায় আরেক রিপোর্ট। আমরা যদি ভালো টেকনোলজি আর দক্ষ জনবল তৈরী করতে পারি তাহলে স্বাস্থ্য খাতে উন্নতি ঘটাতে পারব। আমরা চিকিৎসকরা চিকিৎসা করতে নির্ভর করি যথাযথ ইনভেস্টিগেশনের উপর। রক্তের রিপোর্ট, এক্স- রে রিপোর্ট এইগুলো যদি যথাযথ না হয় তাহলে সঠিক চিকিৎসা সম্ভব নয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা এই দেশের ভবিষ্যৎ। স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ভালো পর্যায়ে নিয়ে আসতে তোমাদের যথাযথ ভূমিকা রাখতে হবে। ঠিকমতো পড়াশোনা করতে হবে। আমি বারবার বলে আসছি প্রান্তিক জনগণের যথাযথ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতেই হবে। প্রকৃত সার্ভিস দিতে হবে। রোগীদের ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস ভালো করে পরীক্ষা করতে হবে। রোগীদের ঠিকমত ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করতে হবে। ঢাকা মেডিকেল বা হৃদরোগ হাসপাতালে রোগী ফ্লোরে পড়ে থাকে। এইগুলো বন্ধ করতে আমাদের উপজেলা লেভেলের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হাসপাতালগুলোকে স্বাবলম্বী করতে হবে। বাংলাদেশের প্রত্যেক সংসদ সদস্য যদি হাসপাতালে আসেন ব্লাড প্রেসার দেখান, ডায়াবেটিস পরীক্ষা করেন। তাহলে মানুষের আস্থা ফিরে আসবে। ঢাকায় কোন রোগী আসবে না।

আমরা চেষ্টা করব মানুষের দোড়গোড়ায় যেন চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেওয়া যায় যেটা বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিলো। বর্তমানে শেখ হাসিনা বিদেশে যেভাবে স্বাস্থ্যখাতের রোল মডেল হিসেবে সমাদৃত এটা আমাদের ধরে রাখতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মান ধরে রাখতে হবে। আমাদের মনোযোগ দিয়ে কাজ করতে হবে। আমরা যে যার জায়গায় আছি তার দায়িত্বটা সঠিকভাবে পালন করলেই আমরা এটা পারবো। প্রত্যেকের ভিতর দেশপ্রেম থাকতে হবে। আমার দেশ বাংলাদেশ মাটির দেশ। মন্ত্রী আরো বলেন, আমি জীবনেও রাজনীতির ধারে কাছে ছিলাম না। মন্ত্রী হবার স্বপ্নও ছিলো না। প্রধানমন্ত্রী আমাকে এতো বড় একটা সম্মান দিয়েছেন। আমি আমার জান- প্রাণ দিয়ে চেষ্টা করব যাতে এই দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে যত দ্রত সম্ভব একটা ভালো পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া যায়।

মতবিনিময় সভায় এবং সামগ্রিক পরিদর্শনে আরো উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের মাননীয় চীফ হুইপ জনাব নূর-ই-আলম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ রোকেয়া সুলতানা, স্বাস্থ্য শিক্ষা বিভাগের সচিব জনাব মোঃ আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক ডা. আহমেদুল কবীরসহ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও শিবচর জেলা,  উপজেলা কর্মকর্তাবৃন্দ।

আরএস