ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের ব্যয় ঠেকাতে রাশিয়ার তেলের মূল্য নির্ধারণে একমত হয়েছে জি-৭ ভুক্ত জোট। আর তেলের মূল্য নির্ধারণ করা হলে সেসব দেশগুলোর কাছে তেল বিক্রি না করার ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া।
মূল্যসীমা বেঁধে দেওয়ার এ পদক্ষেপ বিশ্বের তেলের বাজারকে উল্লেখযোগ্যভাবে অস্থিতিশীল করে তুলবে বলে মন্তব্য করেছে মস্কো।
শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, যেসব কোম্পানি মূল্যসীমা আরোপ করবে তারা আর রাশিয়ার তেল পাবে না। বাজারের সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন নীতিতে আমরা তাদের সঙ্গে আর সহযোগিতা করব না।
শুক্রবার জি-৭ জোটের অর্থমন্ত্রীরা জানিয়েছেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি ‘বিনিময় মূল্যের’ চুক্তির ওপর তারা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবেন।
শক্তিশালী অর্থনীতির জি-৭ জোটের দেশগুলো হচ্ছে- যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, কানাডা, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি ও যুক্তরাজ্য।
তেল রপ্তানি থেকে রাশিয়ার আয় হ্রাস করাই এসব পদক্ষেপের লক্ষ্য। রাশিয়ার তেলের মূল্যসীমা বেঁধে দিতে গত কয়েক মাস ধরে জি-৭ জোটের দেশগুলোকে চাপ দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন।
এর আগে চলতি বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার তেল ক্রয়ের ওপর আংশিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এ নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি কার্যকর হলে রাশিয়ার তেল রপ্তানি ৯০ শতাংশ হ্রাস পাবে বলে ধারণা ইইউয়ের।
আন্তর্জাতিক জ্বালানি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, ইউক্রেইনে রাশিয়ার কথিত ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু হওয়ার আগে দেশটির প্রায় অর্ধেক অপরিশোধিত তেল ও পেট্রলিয়াম পণ্য ইউরোপে রপ্তানি হতো। জার্মানি, পোল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডস ছিল রাশিয়ার জ্বালানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে মস্কোর উপর নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্রদেশগুলো। এসব নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাশিয়ার বহু রপ্তানিযোগ্য পণ্য রয়েছে।
কিন্তু তেল বিক্রির কারণে রাশিয়ার অর্থনীতিতে মারাত্মক কোনো প্রভাব পড়েনি। বরং তেল বিক্রির মাধ্যমে আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারছে রাশিয়া।
বিশ্লেষকদের মতে, জি-৭ জোটের নতুন এ সিদ্ধান্ত ভারত ও চীন সমর্থন নাও করতে পারে। কারণ ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর কোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞার বিপক্ষে ছিল ভারত ও চীন।
টিএইচ