বেশ কয়েকটি ওষুধের ক্ষেত্রে সতর্কবার্তা দিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাব্লিউএইচও)। ভারতে তৈরি ৪ টি কাফ সিরাপ বা কাশির ওষুধের ক্ষেত্রে সতর্ক করা হয়েছে। সম্প্রতি গাম্বিয়ায় ৬৬ জন শিশুর মৃত্যুর সঙ্গে ভারতের একটি ওষুধ উৎপাদনকারী কোম্পানির তৈরি কাশি ও ঠান্ডার সিরাপের সম্পর্ক থাকতে পারে। এই আশঙ্কা থেকেই ওই সিরাপ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিএইচও)।
তাছাড়া নয়াদিল্লির মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি ওই সিরাপ যাতে অন্য কোনো দেশ ব্যবহার না করে, সেই বার্তাও দেওয়া হয় ডব্লিএইচওর পক্ষ থেকে।
সম্প্রতি কিডনি বিকল হয়ে ৬৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে গাম্বিয়ায়। প্রাথমিক তদন্তের পর মনে করা হচ্ছে, মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালসের তৈরি চারটি সিরাপই পাঁচ বছরের কম বয়সী ওই শিশুদের কিডনি বিকল হওয়ার কারণ। ওই চার সিরাপ নিয়ে এরই মধ্যে একটি সতর্কবার্তা জারি করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। পাশাপাশি প্রস্তুতকারক ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গে যৌথভাবে তদন্তও শুরু করেছে ডব্লিউএইচও।
সতর্কবার্তায় ডব্লিউএইচও জানিয়েছে, মেডেন ফার্মার পণ্যগুলো অনানুষ্ঠানিক বাজারের মাধ্যমে অন্যত্রও সরবরাহ করা হতে পারে। তবে এখন পর্যন্ত শুধু গাম্বিয়াতে চিহ্নিত করা হয়েছে। প্রোমেথাজিন ওরাল সলিউশন, কফেক্সমালিন বেবি কফ সিরাপ, মেকফ বেবি কফ সিরাপ এবং ম্যাগ্রিপ এন কোল্ড সিরাপ। এই চারটি পণ্যের বিষয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
ডব্লিউএইচও আরও বলছে, ল্যাব বিশ্লেষণ নিশ্চিত হওয়া গেছে, এতে ‘অগ্রহণযোগ্য’ পরিমাণ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল ও ইথিলিন গ্লাইকোল রয়েছে যা খেলে বিষক্রিয়া হতে পারে।
প্রাথমিক তদন্তের পরে ভারতের ড্রাগ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশনের তরফে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র গাম্বিয়াতেই ওই বিষাক্ত ওষুধ পাঠানো হয়েছে। তবে চোরাই পথে গাম্বিয়া থেকে আফ্রিকার অন্যান্য দেশেও এই বিষাক্ত ওষুধ ছড়িয়ে পড়েছে বলেই অনুমান করা হচ্ছে। শুধুমাত্র আফ্রিকা নয়, ভারতের মধ্যেও এই ওষুধ ছড়িয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করেছে হু। আরও জানা গিয়েছে, এই ওষুধের বিষয়টি নিয়ে গাম্বিয়াতে মাসখানেক আগেই তদন্ত শুরু হয়েছিল। তখন শিশু মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ২৮। তারপরে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শিশুদের মৃত্যুর সংখ্যা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতেই ভারতের মেডেন ফার্মাসিউটিক্যালের ওষুধকে দায়ী করা হয়েছে।
জুলাইয়ের শেষের দিকে গাম্বিয়ায় পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুদের মাঝে মারাত্মক কিডনি জটিলতায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকভাবে শনাক্ত হতে থাকে। তাদের মধ্যে ২৮ শিশু আগস্টেই মারা যায়। পরে এই সংখ্যা আরও বাড়ে। গত মাসে শিশুদের মৃত্যুর বিষয়টি তদন্ত করে দেখার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।
ইএফ