জিরো কোভিড নীতি বাতিলের পর গত ৮ ডিসেম্বর থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত চীনে অন্তত ৬০ হাজার মানুষ করোনায় মারা গেছেন।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিতর্কিত কোভিড নীতি বাতিলের পর শনিবার চীনের সরকারি স্বাস্থ্য সংস্থা করোনায় প্রাণহানির এই তথ্য প্রথমবারের মতো প্রকাশ করেছে।
চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশনের চিকিৎসাবিষয়ক বিভাগের পরিচালক জিয়াও ইয়াহুই বলেছেন, মেডিক্যাল ইনস্টিটিউটগুলো গত এক মাসের কিছু বেশি সময়ে কোভিড সংক্রমণের কারণে সৃষ্ট শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয়ে ৫ হাজার ৫০৩ জনের প্রাণহানির তথ্য রেকর্ড করেছে।
এছাড়া একই সময়ে কোভিডে আক্রান্ত, কিন্তু ক্যানসার বা কার্ডিওভাসকুলারের মতো বিভিন্ন রোগে অসুস্থ আরও ৫৪ হাজার ৪৩৫ জন মারা গেছেন।
যারা মারা গেছেন তাদের গড় বয়স ৮০ দশমিক ৩ বছর। যাদের প্রাণহানি ঘটেছে তাদের ৯০ শতাংশের বয়স ৬৫ বছর বা তার বেশি।
গত মাসে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন কোভিড-১৯ রোগী, যারা শ্বাসতন্ত্র বিকল হয়ে মারা যাবেন কেবল তাদের সরকারি করোনায় মৃত্যুর তালিকায় যুক্ত করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তিন বছরের বেশি সময় ধরে করোনাভাইরাস মহামারির প্রকোপে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটলেও চীন শুরু থেকেই এই ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক সামাজিক বিধি-নিষেধ আরোপ করে।
যা নিয়ে দেশটিতে সম্প্রতি বিক্ষোভ করেছেন হাজার হাজার মানুষ। করোনা বিধিবিরোধী বিক্ষোভে জেরে চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট সরকার ডিসেম্বরের শুরুর দিকে বিতর্কিত জিরো কোভিড নীতি বাতিলের ঘোষণা দেয়।
এছাড়া মহামারির শুরু থেকে চীন এই ভাইরাসে আক্রান্ত এবং প্রাণহানির সঠিক সংখ্যা প্রকাশ করছে না বলে অভিযোগ করেছে বিশ্বের কিছু দেশ। তবে কোভিডের কঠোর বিধিনিষেধ বাতিলের পর দেশটিতে ভাইরাসটির ব্যাপক প্রকোপ শুরু হয়েছে।
প্রকোপ বাড়তে থাকায় দেশটির বিভিন্ন হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের উপচে পড়া ভিড় এবং শেষকৃত্য অনুষ্ঠান স্থলে লাশের দীর্ঘ সারি দেখা যাচ্ছে।
মহামারির এমন প্রকোপের পরিপ্রেক্ষিতে চীন থেকে আসা ভ্রমণকারীদের নেগেটিভ পরীক্ষার সনদ প্রদর্শনসহ নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।
এআরএস