সিরিয়া ও তুরস্কে ভয়াবহ ভূমিকম্পে প্রাণহানির সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার ছুঁইছুঁই। ভূমিকম্পে হাজারও বাড়িঘরের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছেন হাজার হাজার মানুষ। সময়ের ব্যবধান বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ধ্বংসস্তূপে আটকা মানুষকে জীবিত উদ্ধারের আশা ক্ষীণ হয়ে আসছে।
প্রকৃতির বৈরী এই আচরণে বাদ যায়নি আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। ধ্বংসস্তূপের নিচে গর্ভবতী মা চাপা পড়ে মারা গেলেও তার সন্তানকে পাওয়া গেছে জীবিত। নাড়ি কেটে উদ্ধার করা সেই সন্তান এখন স্থিতিশীল রয়েছে। দুই দেশে এমন রক্তমাখা শিশুদের উদ্ধারের ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছে বিশ্বের নানা প্রান্তের কোটি কোটি মানুষকে। তুরস্ক-সিরিয়ায় এমন অবর্ণনীয় নানা ঘটনার দৃশ্য দেখে অনেকে চোখের পানিও ফেলেছেন অজান্তেই। বিপর্যস্ত এই দুই দেশে ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধারের কিছু দৃশ্য মানুষের হৃদয়ে ব্যাপক নাড়া দিয়েছে গত দুদিনে।
এমনই একটি ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। যেখানে দেখা যায়, ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত একটি ভবনের ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা পড়েছে প্রায় সমবয়সী দুই ভাই–বোন। ধসে যাওয়ার ভবনের ধ্বংসাবশেষে পুরো শরীর চাপা পড়লেও কেবল দুজনের মাথাটুকুই আছে অক্ষত। আর ছোট্ট ভাইয়ের মাথায় যেন কোনোভাবে ধ্বংসাবশেষ আঘাত করতে না পারে, সেজন্য নিজের হাত দিয়ে ভাইয়ের মাথা আগলে রেখেছে সাত বছরের বোন।
হৃদয়স্পর্শী এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীদের অনেকের চোখে জল এনেছে। অনেকেই হৃদয়বিদারক এই দৃশ্য শেয়ার করে ভাই-বোনের বেঁচে যাওয়াকে অলৌকিকও বলছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে ভাইকে আগলে রাখা বোনের এই ছবি টুইটারে শেয়ার করেছেন মোহাম্মদ সাফা নামে জাতিসংঘের এক প্রতিনিধি।
টুইটের ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, সাত বছর বয়সী মেয়েটি তার ছোট্ট ভাইকে রক্ষার জন্য তার মাথায় হাত দিয়ে রেখেছে। তারা ১৭ ঘণ্টা ধরে ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকা রয়েছে। তাদেরকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে। আমি দেখলাম কেউই ছবিটা শেয়ার করছেন না। ও মারা গেলে সবাই ছবিটি শেয়ার করতেন। ইতিবাচক জিনিস ছড়িয়ে দিন।
আর ভ্লগিং নর্থওয়েস্টার্ন সিরিয়া নামের একটি টুইটার অ্যাকাউন্টে ভাইকে সুরক্ষিত রাখতে বোনের এমন সাহসিকতার ভিডিওটি টুইট করা হয়েছে। টুইটে বলা হয়েছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া ভাইকে রক্ষায় তার মাথায় হাত দিয়ে আগলে রেখেছে সাত বছর বয়সী সিরীয় বোন।
এবি