নিউইয়র্কে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে আয়োজিত রোহিঙ্গা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের আলোচনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় অংশগ্রহন করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন, এমপি।
সভাটিতে ব্রুনেই দারুসসালাম, কানাডা, জিবুতি, মিশর, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, সেনেগাল, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য এবং যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি এবং অন্যান্য পর্যাযের কূটনৈতিক প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
তাছাড়া, জাতিসংঘে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসির স্থায়ী পর্যবেক্ষণ মিশনের রাষ্ট্রদূত পর্যায়ের প্রতিনিধিরাও অংশগ্রহণ করেন। এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম বাংলা প্রেস।
২০২২ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মত মিয়ানমারের পরিস্থিতি বিষয়ক একটি রেজুল্যুশন (২৬৬৯) গৃহীত হয়। এতে মিয়ানমারের বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যাসহ রোহিঙ্গা সংকটের সমাধানের বিষয়টিও বিশেষভাবে প্রাধান্য পায়।
এছাড়া, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বিগত বছরগুলোতে নিয়মিতভাবে রোহিঙ্গা বিষয়ক রেজুল্যুশন পাস হয়। নিরাপত্তা পরিষদ এবং সাধারণ পরিষদের রোহিঙ্গা বিষয়ক এই রেজুল্যুশনগুলোকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণে একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের জোরালো আহ্বান জানানোই ছিল এই সভার মূল উদ্দেশ্য।
বক্তব্য প্রদানকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বিশ্ব সম্প্রদায়ের ব্যাপক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবসনে সফলতা না আসায় হতাশা ব্যক্ত করেন। তিনি এর ফলে বাংলাদেশসহ এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ঝুঁকির সম্ভাবনার কথা পুন: উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মত ছোট আয়তনের দেশে বিশাল জনসংখ্যাসহ অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তার ওপর মিয়ানমার থেকে আগত ১.২ মিলিয়ন রোহিঙ্গাকে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাংলাদেশে আশ্রয় প্রদান করা কোনভাবেই বাস্তবসম্মত নয়।
নিরাপত্তা পরিষদে সম্প্রতি গৃহীত রেজুল্যুশনের প্রসঙ্গ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বলিষ্ঠ নেতৃত্বের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি উপস্থিত সকলের প্রতি আহ্বান জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি আঞ্চলিক সংস্থা আসিয়ান -এর নেতৃত্বের ওপর বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করেন।
সভায় বক্তরা রোহিঙ্গা সমস্যার টেকসই ও স্থায়ী সমাধানে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তারা আসিয়ানের পাঁচ দফা ঐক্যমত্যের সফল বাস্তবায়নের ওপরও জোর প্রদান করেন। তাছাড়া রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ চিহ্নিত করে তা সমাধানের ওপর গুরুত্বারোপ করেন সভায় উপস্থিত প্রতিনিধিরা।
সভায় অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা মিয়ানমার থেকে আগত বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাকে অস্থায়ীভাবে আশ্রয় এবং সকল ধরণের মানবিক সহযোগিতা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশেষ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উল্লেখ্য, এ সভায় স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
এআরএস