নানা অনিয়ম-সহিংসতার মধ্যদিয়ে দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় নেতা ইমরান খান ও তাঁর স্ত্রীকে জেলে রাখার মধ্যে দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পাকিস্তানে জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহন চলছে।
মূলত ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) এর নেতাকর্মীদের ওপর সামরিক বাহিনীর মদদপুষ্ট সরকারের দমন-পীড়নের কারণে স্বাভাবিক নির্বাচনি প্রচারণার পরও ১২ কোটি ৮০ লাখ ভোটারের ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ভোটার উপস্থিতি বেশ কম হবে বলে শঙ্কায় আছেন নির্বাচন বিশ্লেষকরা। খবর এএফপির।
চলমান নির্বাচনে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) অধিকাংশ আসন পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তাদের আশীর্বাদ নিয়েই ৭৪ বছর বয়সী নওয়াজ শরীফ জয়লাভ করতে যাচ্ছেন বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
গেল বুধবার পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের অফিসগুলোতে দুটি বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২৮ জন নিহত এবং ৩০ জনেরও বেশি আহত হন। নাটকীয় হলেও সত্য যে, মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর ইসলামিক স্টেট (আইএস) এ হামলার দায় স্বীকার করে।
যদিও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছে, সহিংসতা এই নির্বাচনে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো প্রভাব ফেলবে না। পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার-উল-হক কাকর বলেছেন, সংঘাত সৃষ্টির যেকোনো প্রচেষ্টাকে নস্যাৎ করে দেওয়া হবে।
এদিকে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, নিরাপত্তার স্বার্থে আজ বৃহস্পতিবার ইরান ও আফগানিস্তানের সঙ্গে দেশটির সীমান্ত বন্ধ রাখা হবে।
এ নির্বাচন পরিবেশকে সুন্দর রাখার স্বার্থে পাকিস্তানজুড়ে মোতায়েন করা হয়েছে সেনাবাহিনী, আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশের সাড়ে ছয় লাখেরও বেশি সদস্যকে। দেশটির ৯০ হাজার ভোটকেন্দ্রে স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে, যা চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। পারমাণবিক শক্তিধর পাকিস্তানের মোট জনসংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি এবং এটি বিশ্বের পঞ্চম জনবহুল দেশ হিসেবে ধরা হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় ১৮ হাজার প্রার্থী দেশটির জাতীয় পরিষদ ও চারটি প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য হতে নির্বাচনে লড়ছেন। তবে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এই দেশটির অর্থনীতি এখন ভঙ্গুরপ্রায়। নানা উত্থান-পতনের রাজনীতিতে জর্জরিত দেশটির সাধারণ মানুষের মধ্যে নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে নিস্পৃহ ভাব বলে মন্তব্য করেছেন, নির্বাচন বিশ্লেষকরা।
বিআরইউ