আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছ থেকে আরও ৭০০ কোটি ডলার ঋণ পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান। এরই মধ্যে এ বিষয়ে তিন বছরের একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে আইএমএফ ও শাহবাজ শরিফের সরকার। স্বাধীনতার পর এ নিয়ে ২৫ বারের মতো আইএমএফের ঋণ নিতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
উভয়পক্ষের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর গতকাল শুক্রবার বিষয়টি ঘোষণা করা হয়। তবে ঋণ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হয়নি। খুব শিগগির আইএমএফের নির্বাহী পরিষদ এই ঋণের অনুমোদন দেবে, যা কেবলই একটি আনুষ্ঠানিকতা। তবে ঋণ কবে ছাড় করা হবে বা আইএমএফের নির্বাহী বোর্ডের বৈঠকে কবে ঋণটি অনুমোদিত হবে সে বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ আওরঙ্গজেব গত মে মাসে বলেছিলেন, আরও বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার জন্য ঋণ প্যাকেজ প্রয়োজনীয়। এ লক্ষ্যে শরিফ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ উপসাগরীয় দেশগুলোর কাছ থেকে তহবিল চাইছেন এবং পাকিস্তানে চীনের বহু-বিলিয়ন অর্থনৈতিক করিডরের দ্বিতীয় ধাপ চালু করার জন্য চাপ দিচ্ছেন।
দুর্নীতি, করোনা মহামারি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও ২০২২ সালের ভয়াবহ বন্যার কারণে অর্থনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থা ২৪ কোটিরও বেশি জনসংখ্যার এই দেশটির। এমন পরিস্থিতিতে অনেকের দাবি, আইএমএফের এই ঋণ পাকিস্তানের অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বর্তমান সরকারকে বেশ খানিকটা সাহায্য করবে।
জার্মান বার্তাসংস্থা ডয়চে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘ ৩৭ মাসের আলোচনা শেষে পাকিস্তান সরকার ও আইএমএফ এই ঋণের ব্যাপারে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তবে আশঙ্কার বিষয় হলো, এই ঋণ এমন এক সময়ে নেওয়া হলো, যখন চলতি বছর দেশটিকে ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে।
এদিকে, আইএমএফের এই ঋণ পাওয়ার জন্য বেশকিছু কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হতে হয়েছে পাকিস্তান সরকার। বিশেষ করে বিভিন্ন খাতে কর বৃদ্ধ, জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধিসহ নানা অজনপ্রিয় পদক্ষেপ নিতে হয়েছে তাদের। আর স্বাভাবিকভাবেই বিষয়গুলো জনগণের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
দীর্ঘ দিনের অর্থনৈতিক সংকটের কারণে পাকিস্তানকে আইএমএফের কাছ থেকে একের পর এক ঋণ নিতে হচ্ছে। এর আগে, চলতি বছরের এপ্রিলে আইএমএফের কাছ থেকে ৩০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছিল দেশটি। তারপর পাকিস্তানের মূল্যস্ফীতি জানুয়ারির ২৮ শতাংশ থেকে নেমে ১২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। -সূত্র: ডয়চে ভেলে
আরএস