বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ও হিন্দুসহ সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য শান্তিবাহিনী পাঠানোর প্রস্তাব আগেই দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার জবাব দিলেন কলকাতা, বাংলা দখল প্রসঙ্গে।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর প্রাক্তন এক সদস্য বলেছিলেন, চার দিনে কলকাতা দখল নিতে পারেন তারা। আবার বিএনপি নেতা রুহুল কবীর রিজভী সম্প্রতি বলছেন, বাংলা বিহার উড়িষ্যা ফেরত দেওয়ার কথা।
সোমবার (৯ নভেম্বর) বিধানসভায় সেই ইস্যুতে পাল্টা মন্তব্য করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বললেন, ‘আমরা বসে ললিপপ খাব না।’
এদিন বিধানসভায় স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের উত্তর দিতে উঠে কথা প্রসঙ্গে মমতা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে আনেন। বলেন, ‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর যে হামলা হচ্ছে, তা দুঃখজনক।’ এরপরেই বিএনপি নেতার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘যারা বলছেন, বাংলা-বিহার-ওড়িশা দখল করবেন, তারা ভাল থাকবেন। আপনার সেই ক্ষমতাও নেই। আর ভাববার কোনো কারণ নেই, যে আমরা বসে ললিপপ খাব। আমরা যথেষ্ট সক্রিয় এবং যথেষ্ট ধৈর্যের পরীক্ষা দিই। আমরা সবাই সবাইকে রক্ষা করব।’
মমতা এ-ও জানান, ‘আমরা অখণ্ড ভারতবর্ষের। বাংলাদেশের রাজনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক নেই।’
বাংলা দখলের প্রসঙ্গ যখন উঠেছে তখন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যে প্রতিক্রিয়া দেবেন এটাই স্বাভাবিক। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা এটাও স্পষ্ট করেছেন, ‘গোটা বিষয়টি কেন্দ্রীয় সরকার দেখছে এবং তারাই ব্যবস্থা নেবে। আমরা কোনো পক্ষে নেই। আমরা সব পক্ষে। আজ বিদেশ সচিব (বাংলাদেশে) যাচ্ছেন। দেখা যাক, কী হয়। আমাদের নীতি হল আমরা বিদেশনীতি মেনে চলব।’
এদিন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী দলীয় বিধায়কদের মন্তব্য করা থেকে সতর্ক করে দেন মমতা। তার সতর্কবার্তা, ‘কোনো অতিরিক্ত মন্তব্য করবেন না, যাতে প্ররোচণার পরিস্থিতি তৈরি হয়। একই বার্তা রাজ্যবাসীকেও।’
এদিন ভারতীয় গণমাধ্যমের একাংশ কেউ এক হাত নেন মমতা পরোক্ষভাবে বিজেপিকে নিশানা করে মমতা বলেছেন, ‘কয়েকটা মিডিয়া যা করছে, তা যথাযথ নয়। এটা উত্তরপ্রদেশ নয় যে আপনাদের ব্যান করব। কিন্তু আবেদন করছি, যথাযথ থাকুন। আর কিছু ফেক ভিডিও ভাইরাল করা হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল করছে। রাজনীতি করবেন না।’
বাংলাদেশে অশান্তি বাড়লে শরণার্থী সমস্যা বাড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির এমন আশঙ্কার জবাবে মমতা এদিন ফের কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে দেন। বলেন, ‘অনেকে এখানে আসতে চাইছেন ওপার থেকে। কিন্তু সেটা বিএসএফ দেখছে। আমরা এই নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।’
আরএস