শক্তিশালী ভূমিকম্পে মিয়ানমারে কমপক্ষে ১৪৪ জন নিহত এবং ৭৩২ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম।
দেশটির সামরিক জান্তা সরকারের বরাতে রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারক এমআরটিভি জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে রাজধানী নেপিদোতে ৯৬ জন, সাইগাইংয়ে ১৮ জন এবং মান্দালয়ে ৩০ জন মারা গেছেন।
এছাড়া আহতদের মধ্যে ১৩২ জন নেপিদো এবং ৩০০ জন সাগাইংয়ের বাসিন্দা, অন্যান্য এলাকার সংখ্যা এখনও নিরুপণ করা হচ্ছে।
শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের ৭ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হানে মিয়ানমারে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতত্ত্ব জরিপ ও গবেষণা সংস্থা ইউএস জিওলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল দেশটির উত্তর-পশ্চিমের শহর সাগাইং থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে। এলাকাটি রাজধানী নেপিডো থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার উত্তরে। এরপর আরও বেশ কয়েকটি আফটার শক অনুভূত হয় আশপাশের অঞ্চলে।
ভূমিকম্প এতই শক্তিশালী ছিল যে শত শত মাইল দূরে চীন ও থাইল্যান্ড থেকেই কম্পন অনুভূত হয়। এছাড়াও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং বন্দর নগরী চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানেও ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমিকম্পের পর সাগাইং, মান্দালাই, ম্যাগওয়ে, বাগো, ইস্টার শান রাজ্য এবং নেপিডো অঞ্চলে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, কর্মকর্তারা ক্ষয়ক্ষতির তদন্ত করবেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধারকাজ সমন্বয় শুরু করবেন।
বিবিসি বার্মিজ সার্ভিসকে মান্দালাই অঞ্চলে কর্মরত উদ্ধারকারী দলের একজন সদস্য বলেছেন, ‘ক্ষয়ক্ষতি অনেক বেশি। মৃত্যুর সংখ্যাও অনেক বেশি, আমরা এখন শুধু এটুকুই বলতে পারি। কারণ উদ্ধার অভিযান চলছে। হতাহতদের সঠিক সংখ্যা এখনও জানা যায়নি। তবে এটি অন্তত শতাধিক।’
এদিকে মিয়ানমারের পাশাপাশি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য স্থানেও কম্পনের খবর পাওয়া গেছে। জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককেও।
থাই প্রধানমন্ত্রী পেতাংতার্ন সিনাওয়াত্রা জানিয়েছেন, মিয়ানমারকে কেন্দ্র করে একটি বড় ভূমিকম্পে ব্যাংকক শহরে আঘাত হানার পর শুক্রবার থাই কর্তৃপক্ষ ব্যাংককে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
৭.৭ মাত্রার এই ভূমিকম্পের পর ব্যাংকক জুড়ে বহু ভবনে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। যার মধ্যে শহরের উত্তরে ধসে পড়া ৩০ তলা নির্মাণাধীন আকাশচুম্বী ভবনও রয়েছে।
বিবিসির সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংককে নির্মাণাধীন ভবন ধসের ঘটনায় নিখোঁজ শ্রমিকের সংখ্যা বেড়ে অন্তত ৭০ জন হয়েছে।
থাইল্যান্ডের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর ইমার্জেন্সি মেডিসিন বলছে, নির্মাণাধীন ৩০ তলা ভবন ধসের ঘটনায় আগে যেখানে ৪৩ জন নিখোঁজ হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল, এটি বেড়েছে। ধসের সময় সেখানে প্রায় ৩২০ জন কর্মী ছিলেন এবং তাদের মধ্যে ২০ জনের মতো লিফটে আটকা পড়েছেন। ওই ভবনের নিচে পড়ে মৃত্যুর সংখ্যা অস্পষ্ট। উদ্ধারকারীরা জীবিতদের সন্ধান চালিয়ে যাওয়ার কারণে ঘটনাস্থলে একটি অস্থায়ী হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে।
ইএইচ