জুলাই কন্যাদের সম্মানজনক মার্কিন পুরস্কার: যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক প্রকাশিত: এপ্রিল ১, ২০২৫, ০১:০৫ পিএম

গত বছরের জুলাই-আগস্ট বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাহসী নারী শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মর্যাদাপূর্ণ "ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ অ্যাওয়ার্ড" পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক নারী সাহসিকা (ইন্টারন্যাশনাল উইমেন অব কারেজ - IWOC) পুরস্কারের পাশাপাশি এই সম্মাননা দেওয়া হয়।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিক্রিয়া

এই প্রসঙ্গটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে।

স্থানীয় সময় সোমবার এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, "সকলের জন্য একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার জন্য কাজ করা নারীদের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। পুরস্কারপ্রাপ্ত নারীরা শান্তি, ন্যায়বিচার, মানবাধিকার এবং নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের সমর্থক।"

সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উৎখাতে জীবন বাজি রেখে গণআন্দোলনে অংশ নেওয়া নারীদের কৃতিত্বের বিষয়ে জানতে চান। তিনি বলেন, "বাংলাদেশি মেয়েরা এই পুরস্কার পাচ্ছেন, ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের জন্য তারা এই স্বীকৃতি পেয়েছেন—এ বিষয়ে আপনার কোনো মন্তব্য আছে?"

মার্কিন প্রতিক্রিয়া

জবাবে মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, "আমি আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কারের বিষয়ে কথা বলব। বাংলাদেশের রাজনীতির প্রকৃতি নিয়ে কোনো মন্তব্য করব না।"

তিনি আরও বলেন, "পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প আগামীকাল (১ এপ্রিল) পররাষ্ট্র দপ্তরে ১৯তম বার্ষিক আন্তর্জাতিক সাহসী নারী পুরস্কার অনুষ্ঠানের আয়োজন করছেন। এই বছর আটজন অসাধারণ নারীকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে এবং বিশ্বজুড়ে ‍‍`ম্যাডেলিন অলব্রাইট অনারারি গ্রুপ IWOC‍‍` পুরস্কারপ্রাপ্তদেরও সম্মাননা জানানো হবে।"

IWOC পুরস্কার ও পুরস্কারপ্রাপ্তদের স্বীকৃতি

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, "IWOC পুরস্কার বিশ্বজুড়ে সেইসব নারীদের স্বীকৃতি দেয়, যারা ব্যতিক্রমী সাহস, শক্তি এবং নেতৃত্ব প্রদর্শন করেছেন। তাদের প্রচেষ্টার ফলে তারা প্রায়শই ব্যক্তিগত নিরাপত্তার ঝুঁকির সম্মুখীন হন।"

তিনি আরও বলেন, ২০০৭ সাল থেকে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর ৯০টিরও বেশি দেশের ২০০ জনের বেশি নারীকে এই পুরস্কারে ভূষিত করেছে। বিদেশে মার্কিন কূটনৈতিক মিশনগুলো তাদের নিজ নিজ দেশের একজন সাহসী নারীকে মনোনীত করে, এবং চূড়ান্ত প্রার্থীদের নির্বাচিত করে পররাষ্ট্র দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অনুমোদন দেন।

পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের পর বিজয়ীরা ওয়াশিংটন ডিসিতে আন্তর্জাতিক ভিজিটর লিডারশিপ প্রোগ্রামে এবং লস অ্যাঞ্জেলেসে অতিরিক্ত কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। সেখানে তারা বিশ্বব্যাপী নারী ও মেয়েদের ক্ষমতায়নের জন্য তাদের কাজকে এগিয়ে নেওয়ার কৌশল নিয়ে আমেরিকান নারীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন

গত শুক্রবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে এই পুরস্কারের ঘোষণা দেওয়া হয়। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১ এপ্রিল) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ও মার্কিন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্পের আয়োজনে বিজয়ীদের হাতে এই সম্মাননা তুলে দেওয়া হবে।

মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার পাওয়ায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের নারী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

ইএইচ