চাকরি প্রার্থীদের পছন্দের শীর্ষে থাকা পুলিশ ক্যাডারে কী আছে

নিজস্ব প্রতিবেদক প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ১১:৪২ এএম

আমাদের দেশে ছাত্র ছাত্রীরা তাদের কর্মজীবনে আকর্ষণীয় ও লোভনীয় চাকুরি প্রত্যাশা করে। প্রতিটা ছাত্র-ছাত্রী স্বপ্ন দেখে সরকারি কর্মকর্তা হওয়ার। তাই তাদের লালিত স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য দিনরাত হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে।

দেশের সিভিল সার্ভিসের প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হওয়ার সকল চাকুরি প্রত্যাশী আকর্ষণ বোধ করেন। দেশের মানুষের জন্য কিছু করার বিশাল সুযোগও থাকে এ চাকরির মাধ্যমে। তা ছাড়া সাধারণত এ পেশাকে সর্বোচ্চ সম্মানের চাকরি বলেই মনে করে থাকে সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিকভাবে সিভিল সার্ভিস সর্বোচ্চ মর্যাদার চাকরি। এ ছাড়া আর্থিক উন্নতি, নিরাপত্তা, এবং কর্মক্ষেত্রের বৈচিত্র্য এ পেশাকে আরো বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। কয়েক বছর ধরে নিয়মিত বিসিএস পরীক্ষার আয়োজন চাকরিপ্রত্যাশীদের বিসিএসের প্রতি আরো বেশি মাত্রায় উৎসাহী করে তুলেছে।
পুলিশ ক্যাডারের সুবিধাসমুহ নিম্নে তু্লে ধরা হলো—

প্রশিক্ষণ বৈচিত্র্যময় :
পুলিশের প্রশিক্ষণ নানান রকমের আছে। এই সুযোগ আবার দেশে ও বিদেশে পাওয়া যায়। চাকরিতে যোগদানের শুরুতেই একজন পুলিশ ক্যাডারকে এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ করতে হয় রাজশাহীর সারদায়। এ পুলিশ প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন অংশে বিভক্ত।

যার মধ্যে রয়েছে অস্ত্র প্রশিক্ষণ, ঘোড়া চালনা, ড্রাইভিং, ডিফেন্সিভ টেক্টিকস (মার্শাল আর্ট, কারাতে, ইত্যাদি), শারীরিক প্রশিক্ষণ ইত্যাদি। এ ছাড়া প্রশিক্ষণ চলাকালীন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে একটি মাস্টার্স করা বাধ্যতামূলক। বেসিক ট্রেনিংয়ের পর বিপিএটিসিতে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ করতে হয় প্রত্যেক ক্যাডারকে। এ ছাড়া চাকরিজীবনের নানা পর্যায়ে দেশে-বিদেশে নানান প্রশিক্ষণের সুযোগ তো থাকছেই।

অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থান:
অন্য সব ক্যাডারের মতই বেতন পেয়ে থাকেন পুলিশ ক্যাডাররা। কিন্তু জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কাজের সুবাদে পুলিশ সদস্যরা অর্থনৈতিক ভাবে বেশ লাভবান হয়ে থাকেন। এ ছাড়া সামাজিকভাবে পুলিশ ক্যাডার নিরাপদ অবস্থানেই থাকেন। কর্মক্ষেত্রের প্রয়োজনেই একজন পুলিশ ক্যাডার চাকরি জীবনের শুরু থেকেই সবসমইয়ের জন্য গাড়ি সুবিধা পেয়ে থাকেন। তা ছাড়া বিশেষ বাহিনী হিসেবে র‍্যাবে কাজ করার সুবাদে বেতনের অতিরিক্ত ভাতা পেয়ে থাকেন। এ ভাতা সুবিধা অন্য দুয়েকটি ইউনিটেও আছে। তা ছাড়া এই চাকরিতে যেহেতু ইউনিফর্ম বাধ্যতামূলক, তাই ইউনিফর্মের জন্যও পুলিশ সদস্যরা ভাতা পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া পুলিশের বিভিন্ন স্থাপনাতে অগ্রাধিকার ও বিশেষ সুবিধা পেয়ে থাকেন পুলিশ ক্যাডারের অফিসাররা।

আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কাজের সুযোগ :
বাংলাদেশ পুলিশ ১৯৮৯ সাল থেকে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে কাজ করছে। এরই মধ্যে পুলিশের নারী সদস্যরাও মিশনে গেছেন। আফ্রিকা-এশিয়ার, এমনকি আমেরিকার দারিদ্র্যপীড়িত আর দ্বন্দ্ব-সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বাংলাদেশ পুলিশ প্রশংসনীয় কাজ করে যাচ্ছে। এ ছাড়া ইন্টারপোলের সদস্য হিসেবে অন্য সদস্য দেশের সাথে সহযোগিতার সম্পর্ক বজায় রেখে কাজ করে যাচ্ছে বাংলাদেশ পুলিশ।

উচ্চশিক্ষার সুযোগ:
মৌলিক প্রশিক্ষণের সময়েই একজন পুলিশ ক্যাডার কে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে (পুলিশ সাইন্সে) মাস্টার্স প্রোগ্রাম সম্পন্ন করা বাধ্যতামূলক। এ ছাড়া চাকরিজীবনের নানা পর্যায়ে বিভিন্ন বিদেশি সরকার ও সংস্থার অর্থায়নে পুলিশ সদস্যরা মাস্টার্স বা পিএইচডি প্রোগ্রামে স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পান। এ ছাড়া ব্যক্তিগত উদ্যোগেও দেশি-বিদেশি নানান বিশ্ববিদ্যালয়েও পড়ালেখা করছেন কেউ কেউ।
এ সব সুবিধার ফলে চাকুরি প্রত্যাশীদের পছন্দের শীর্ষে থাকে পুলিশ ক্যাডার।আর অবসরের ফলে পুলিশ ক্যাডারের সদস্যরা একটা প্রটোকলের মধ্যে থাকে।তাই পুলিশ ক্যাডার অনেক লোভনীয় চাকুরি তাই সকলের চাওয়া ও পছন্দের শীর্ষে পুলিশ ক্যাডার।

এফআর/বিআরইউ