ঘুষ গ্রহণ মামলায়

এনামুল বাছিরের জামিনের একদিন পরই প্রত্যাহার

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: আগস্ট ২৪, ২০২২, ০১:৪৭ পিএম

ঘুষ গ্রহণের মামলায় বিচারিক আদালতে আট বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) বরখাস্তকৃত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আদেশ একদিন পরেই প্রত্যাহার করেছেন হাইকোর্ট।

মূল আপিল আবেদনের সাথে জামিন আবেদন না থাকায় বুধবার (২৪ আগস্ট) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ আগের দিনের জামিন প্রত্যাহার করে নতুন এই আদেশ দিয়েছে।

আদালতে এনামুল বাছিরের পক্ষে অ্যাডভোকেট ফারুক আলমগীর চৌধুরী, দুদকের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খুরশিদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আশেক মোমেন শুনানি করেন।

এর আগে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) একই বেঞ্চ তার জামিন আদেশ দেন।

গত ২৩ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। এ ছাড়া বাছিরকে ৮০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।

২০১৯ সালের ৯ জুন একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে প্রচারিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে পরিচালিত দুর্নীতির অনুসন্ধান থেকে দায়মুক্তি পেতে দুদক পরিচালক বাছিরকে ৪০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন ডিআইজি মিজান। 

ঘুষ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথন রেকর্ড করে ওই চ্যানেলকে দিয়েছিলেন মিজান। ডিআইজি মিজানও এ বিষয়ে নিজেই গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলা থেকে বাঁচতে ওই অর্থ ঘুষ দেন বলে ডিআইজি মিজান দাবি করেন।

এনামুল বাছিরের আইনজীবী ফারুক আলমগীর চৌধুরীকে বিচারক বলেন, “আইনজীবীদের কথা আমরা বিশ্বাস করি। এ কারণে আপনাদের কথার ওপর বিশ্বাস করে অনেক আদেশ দিয়ে থাকি। 

আপনি এনামুল বাছিরের আপিলের নথিতে জামিনের দরখাস্ত সংযুক্ত না করেই জামিন শুনানি করেছেন, এটা একটা অপরাধ।

“দ্বিতীয়ত, আপনি আদালতকে না জানিয়ে পরে জামিনের দরখাস্ত বেঞ্চ অফিসারের কাছে দিয়েছেন। এটা আরেকটা অপরাধ। এই পেশাগত অসদাচারণের জন্য আমরা আপনাকে বার কাউন্সিলে পাঠাতে পারতাম। 

কিন্তু তা করছি না। তবে খন্দকার এনামুল বাছিরের জামিন আদেশ প্রত্যাহার করে নিচ্ছি এবং মামলাটি কার্যতালিকা থেকে বাদ দিচ্ছি।”

জামিন আদেশ প্রত্যাহারের পর দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, “গতকাল দুইপক্ষকে শুনে আদালত এনামুল বাছিরকে জামিন দিয়েছিলেন। আজকে অর্ডারটি রি-কল করে মামলাটি আউট অব লিস্ট করে দিয়েছে আদালত।”

কমিটি ২০১৯ সালের ১০ জুন প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে পরিচালক বাছিরকে দুদকের তথ্য অবৈধভাবে পাচার, চাকরির শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সর্বোপরি অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে কমিশন।

পরে একই বছরের ১৬ জুলাই দুদক পরিচালক ও অনুসন্ধান টিমের দলনেতা শেখ মো. ফানাফিল্লাহ মানি লন্ডারিং আইনে সংস্থার ঢাকা-১ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলা দায়ের করেন। 

একই বছর ২২ জুলাই এনামুল বাছিরকে গ্রেপ্তার করে দুদকের একটি দল। সেই থেকে তিনি কারাগারে। অপরদিকে দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার ডিআইজি মিজানকে এ মামলায়ও গ্রেপ্তার করা হয়।

এরপর চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ঘুষ নেওয়ার কারণে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় দুদকের বরখাস্ত পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছিরকে আট বছর ও পুলিশের বরখাস্ত উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মিজানুর রহমানকে তিন বছর কারাদণ্ড দেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় দেন।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে আপিল এবং জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন জানান দুদকের বরখাস্ত হওয়া পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির।

 

আমারসংবাদ/টিএইচ