একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত এবং দীর্ঘদিন যাবৎ পলাতক আসামি আব্দুল মজিদকে মাদারীপুর থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৩।
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কাওরান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং থেকে এসব তথ্য জানান (র্যাব-৩ অধিনায়ক) লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
ব্রিফিং থেকে জানা যায়, আসামির বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালে হত্যা, গণহত্যা, অপহরণ, নির্যাতন, লুণ্ঠন, অগ্নিসংযোগ ও ধর্ষণসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের সাতটি অভিযোগ আনা হয়। ১৯৭০ সালে গঠিত জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কমিটির ঘোষিত তালিকা মোতাবেক আটক আসামি মজিদ পূর্বধলা থানা জামায়াত ইসলামীর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিল। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী এবং পাকিস্তানি হানাদারদের দোসর হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের আপামর জনতার ওপর অমানবিক ও পৈশাচিক নির্যাতনের অভিযোগ উঠে।
আটক আসামি মজিদ রাজাকারদের প্রধান বাহিনী আল-বদর পূর্বধলা রামপুর থানা কমিটির প্রধান ছিল। ১৯৭১ সালে ২১ আগস্ট দুপুরে আব্দুল মজিদ তার দলবল নিয়ে বাড়হা গ্রামের আব্দুল খালেকের বাড়িতে আক্রমণ করে। সে সময় বাড়িতে অবস্থানরত আব্দুল খালেকসহ মুক্তিবাহিনীর সকলকে এক এক করে আসামি ও তার সহযোগিরা নির্মমভাবে গুলি করে হত্যা করে।
হত্যার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেকের লাশটি পার্শ্ববর্তী কংস নদীতে ফেলে দেয় এবং অপরাপর মুক্তিযোদ্ধাদের লাশ কোকখালী নদীতে বস্তাবন্দি করে ফেলে দিয়ে আসে। এই হত্যাকান্ডের পাশাপাশি তারা আব্দুল খালেকের বাড়িতে লুটপাট চালায় এবং অগ্নিসংযোগ করে। এ ঘটনায় মৃত আব্দুল খালেকের ভাই আব্দুল কাদের বাড়ি থেকে পালিয়ে কোন রকমে প্রাণ বাঁচায়।
পরবর্তীতে ২০১৪ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে আব্দুল মজিদসহ ০৪ জনকে আসামি করে মামলা করে আব্দুল কাদের। পরবর্তীতে মামলার গভীর তদন্তে আরও তিনজনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে এবং আসামিদের বিরুদ্ধে সাতটি অভিযোগই প্রসিকিউশনের মাধ্যমে প্রমাণিত হলে মোট সাতজন আসামির বিরুদ্ধে মৃত্যুেণ্ডের রায় প্রদান করে আদালত।
টিএইচ