খেলাপি ঋণের একটি মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান আরামিট সিমেন্ট লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
একইসঙ্গে আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট হিসাবটির গত এক বছরের হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
সোমবার চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালতের বিচারক মুজাহিদুর রহমান এ আদেশ দিয়েছেন বলে আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. রেজাউল করিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সাইফুজ্জামানের স্ত্রী রুকমিলা জামান খেলাপি ঋণে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান আরামিট সিমেন্ট পিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৭ টাকা খেলাপি ঋণের মামলাটি দায়ের করে ব্যাংক এশিয়া।
মামলার নথি পর্যালোচনায় জানা যায়, সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ মন্ত্রী থাকা অবস্থায় ব্যাংক এশিয়ার কাছ থেকে ঋণ নেয় তাদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড। পরিশোধ না করায় সেই ঋণ খেলাপিতে পরিণত হলে ২০২৩ সালের ১১ নভেম্বর তৎকালীন ভূমি মন্ত্রীর স্ত্রী রুকমিলা জামান, আরামিট সিমেন্ট পিএলসির চেয়ারম্যান আলহাজ এস.এম আলমগীর চৌধুরী, পরিচালক ওয়ারাসুজ্জামান চৌধুরী, খোরশেদুল আলম, মো. হাবিব উল্লাহ, মো. শফিকুল ইসলাম এবং প্রতিষ্ঠান হিসেবে আরামিট সিমেন্টকে বিবাদি করে আদালতে মামলা দায়ের করে ব্যাংক এশিয়ার ফার্স্ট অ্যাসিস্টেন্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মাসুদুল ইসলাম। তবে সে সময়কার প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ভূমি মন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদকে মামলায় বিবাদী করা হয়নি।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর ব্যাংক এশিয়ার পক্ষ থেকে আদালতকে অবহিত করা হয় যে, আরামিট সিমেন্টকে দেওয়া ঋণের বিপরীতে তাদের মোট পাওনা দাঁড়িয়েছে ১৪ কোটি ৬৩ লাখ ৯৮ হাজার ৮৮৭ টাকা ৬৩ পয়সা। এ ঋণের বিপরীতে বিবাদীদের কোনো সম্পত্তি ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই।
এছাড়া ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর বিবাদীরা দেশত্যাগ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ অর্থ বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে। বাদি পক্ষ ২৬ নভেম্বর ক্রোকাবদ্ধের দরখাস্ত দিলে আদালত শুনানির জন্য ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।
আবেদনে আদালতকে জানানো হয়, আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির নামে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, বহদ্দারহাট শাখায় একটি ব্যাংক হিসাব রয়েছে যার নম্বর-০৭৯১১০১০০০০০০০৩৮। হিসাবটি ক্রোকাবদ্ধ না করা হলে আসামিদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ পাওনা আদায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আরিফ উদ্দিন বলেন, ‘আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির মালিক সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদ। তিনি সরকার পতনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। এছাড়া ওই সিমেন্ট কোম্পানির নামে নেওয়া ঋণের বিপরীতে কোনো স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ নেই।’
তিনি বলেন, ‘আদালত আমাদের ক্রোকাবদ্ধের আবেদন পর্যালোচনা করে আজ শুনানি শেষে আরামিট সিমেন্ট কোম্পানির বহদ্দারহাট শাখার একটি হিসাবের সমস্ত লেনদেন স্থগিতের আদেশ দিয়েছেন। একইসাথে ব্যাংকটির ওই শাখাকে আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে সংশ্লিষ্ট হিসাবটির গত এক বছরের হিসাব বিবরণী দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।’
এইচ