গুলিবিদ্ধ রিকশাচালককে চিকিৎসা না দেয়ার মামলায় ৫ জন কারাগারে

আদালত প্রতিবেদক প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৬:৫১ পিএম

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলার সময় গুলিবিদ্ধ রিকশাচালক মো. ইসমাইলকে চিকিৎসা না দেয়ার মামলায় রাজধানীর রামপুরার ডেল্টা হেলথকেয়ার হাসপাতালের এক চিকিৎসকসহ পাঁচজনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

কারাগারে যাওয়া আসামিরা হলেন, ডেল্টা হেলথকেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ডা. সাদি বিন শামস, মার্কেটিং অফিসার হাসান মিয়া, মেইনটেনেন্স বোরহান উদ্দিন, সিকিউরিটি গার্ড ইসমাঈল ও নাজিম উদ্দিন।

শনিবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাসুমা রহমান তাদের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর এই আদেশ দেন।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রিকশাচালক মো. ইসমাইল হামাগুড়ি দিয়ে নিজের জীবন বাঁচানোর আকুতির ভিডিও সম্প্রতি ভাইরাল হয়। কিন্তু হাসপাতালের নিরাপত্তাকর্মীরা দরজা খোলেননি। চিকিৎসাও দেননি। পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে সিঁড়ির ওপরেই প্রাণ হারান ইসমাইল।

ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তাদের নজরে আসে। ফলে গত শুক্রবার বিকেলে ডেল্টা হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে সেসময় দায়িত্বপালন করা কারাগারে পাঠানো আসামিদের আটক করে হাতিরঝিল থানা-পুলিশ।

শনিবার তদন্ত কর্মকর্তা হাতিরঝিল থানার সাব-ইন্সপেক্টর হিরণ মোল্লা এ ঘটনায় করা হত্যা মামলায় তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানিয়ে আদালতে হাজির করেন।

আবেদনে বলা হয়, ভিকটিম ইসমাইল (৪৬) ঘটনার দিন ১৯ জুলাই বিকেল আনুমানিকক সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টার মধ্যে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত অবস্থায় রামপুরার ডেলটা হেলথ কেয়ারের প্রবেশ পথের সিঁড়িতে পড়ে ছিলেন।

হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য তাকে নিয়ে গেলেও তাকে কোনো প্রকার চিকিৎসা প্রদান করা হয় নাই। পরবর্তীতে তিনি বিনা চিকিৎসায় সেখানে মৃত্যুবরণ করে। অভিযান চালিয়ে এই পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করি।

মামলা সংক্রান্তে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা ঘটনার সময় ডেলটা হেলথ কেয়ারে উপস্থিত ছিলেন কিন্তু তারা ইসমাইলকে কোনো প্রকার প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে নাই। ভিকটিমের মৃত্যুর জন্য তাদের অবহেলা পরিলক্ষিত হয় মর্মে প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়।

মামলা থেকে জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গত ১৯ জুলাই বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ইসমাইল আলী পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন। কিন্তু আসামিদের অস্ত্রের মহড়ার কারণে তিনি চিকিৎসা নিতে পারেননি।

স্ত্রী লাকি বেগম হুমকির কারণে লাশটা পোস্টমর্টেম করতে পারেননি। আওয়ামী সরকারের পতনের পর লাকি বেগম হাতিরঝিল থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।

ইএইচ