সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে করা আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে পাঠিয়েছেন চেম্বার জজ আদালত।
একই সঙ্গে এ বিষয়ে আগামী ২ মার্চ শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের করা আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক চেম্বার জজ আদালত এই আদেশ দেন।
আদালতে এদিন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন রাষ্ট্রের অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। আর রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। তাকে সহযোগিতা করেন কামরুজ্জামান ভূঁইয়া ও ফয়েজ উদ্দিন আহমেদ।
এর আগে এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়ের করা রিটের ওপর জারি করা রুলের পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে গত ৬ ফেব্রুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে নিয়োগে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন হাইকোর্ট।
রায়ে ৬ হাজার ৫৩১ জনকে নির্বাচন করে প্রকাশিত চূড়ান্ত ফলাফল এবং নির্বাচিত ব্যক্তিদের অনুকূলে নিয়োগপত্র ইস্যুর সিদ্ধান্ত আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হয়। পাশাপাশি মেধার ভিত্তিতে গত বছরের ২৩ জুলাইয়ের পরিপত্র অনুসরণ করে নতুন করে ফলাফল প্রকাশ করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের রায় স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পক্ষে গত সপ্তাহে আপিল বিভাগে আবেদন করা হয়। গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালতে শুনানির জন্য ওঠে। তবে সেদিন আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. রেজাউল হক চেম্বার জজ আদালত নট টুডে বা আজ নয় মঞ্জুর করেন।
সেদিন এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মুনতাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, আবেদনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল শুনানি করবেন। সেজন্য সময় চাওয়া হয়। আদালত ১ দিন সময় মঞ্জুর করেছেন। তারই প্রেক্ষিতে আজ (১৮ ফেব্রুয়ারি) আবেদনের ওপর শুনানি হয়।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৪ জুন ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। এরপর ৬ হাজার ৫৩১ প্রার্থীকে নির্বাচন করে গত বছরের ৩১ অক্টোবর নিয়োগ পরীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করা হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গত ১১ নভেম্বরের এ সংক্রান্ত আদেশ অনুসারে নির্বাচিত প্রার্থীদের অনুকূলে ২০ নভেম্বর নিয়োগপত্র ইস্যু করার কথা ছিল। তবে ওই নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা অনুসরণের অভিযোগ তুলে ফলাফল প্রকাশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে নিয়োগবঞ্চিত ৩১ প্রার্থী নভেম্বরে রিট করেন।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট রুল জারির নির্দেশ দেন এবং ৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্তের কার্যক্রম স্থগিত করেন। রুলে ৩১ অক্টোবরের ফলাফল প্রকাশের বিজ্ঞপ্তি ও নিয়োগ বিষয়ে ১১ নভেম্বরের নির্দেশনাসংবলিত স্মারক কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মহাপরিচালকসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের আদেশ (৩১ অক্টোবর ও ১১ নভেম্বরের সিদ্ধান্ত স্থগিত) স্থগিত চেয়ে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগ লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে, যা ৯ ডিসেম্বর আপিল বিভাগে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে দিয়ে হাইকোর্টে এ সংক্রান্ত রুল নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। চূড়ান্ত শুনানি শেষে রুল যথাযথ (অ্যাবসলিউট) ঘোষণা করে চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি রায় দেওয়া হয়।
আরএস