প্রেজেন্টেশনে নিজের ওপর আত্মবিশ্বাস তৈরিতে যা করবেন

আমার সংবাদ ডেস্ক: প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৪, ০৫:১০ পিএম

কর্মক্ষেত্রে প্রথম যেকোনো কিছুতেই আমরা নার্ভাস থাকি। সেটি হতে পারে প্রথম মিটিং বা প্রেজেন্টেশন। কী করবেন বা কী বলবেন কিছুই যেন মাথায় আসছে না। প্রথম দিকে এসবে একধরনের জড়তা ও অস্বস্তি কাজ করে।

কিন্তু ঠিকঠাক স্ট্র‍্যাটেজি অনুসরণ করলে এসবও আয়ত্ত্বে নিয়ে আসা সম্ভব। এজন্য প্রয়োজন শুধু একটু কনফিডেন্স, সঙ্গে কিছু টিপস ও ট্রিকস। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক তেমনই কিছু টিপস, যেগুলো অফিস মিটিং বা প্রেজেন্টেশনে এ আপনাকে রাখবে কনফিডেন্ট।

টপিক নিয়ে রিসার্চ ও প্র‍্যাকটিস:

মিটিং বা প্রেজেন্টেশনের আলোচ্য বিষয় সম্পর্কে অবশ্যই আগে থেকে ভালোভাবে জেনে নিবেন।

এতে করে কীভাবে কথা বলতে হবে, সে বিষয়ে আগে থেকেই প্রিপারেশন নেওয়া যাবে। হতে পারে মিটিংয়ে নতুন আইডিয়া জানতে চাইতে পারে। আগে থেকে প্রস্তুতি নিলে আপনি আইডিয়া আগেই নির্ধারণ করতে পারবেন। এই আইডিয়াতে সাফল্যের সম্ভাবনা কতটুকু, কী কী বাধা আসতে পারে, কতদিনের মধ্যে কাজ শুরু করা যেতে পারে এসব সম্পর্কে সঠিক গবেষণা করে নিতে পারবেন।

এতে করে যখন মিটিংয়ে কথা বলবেন, আপনার আলোচনা বেশ ভালো ভিত্তি পাবে এবং অন্যান্যদের তুলনায় আপনি অনেকটা এগিয়ে থাকবেন।

ঠিকঠাক ড্রেস কোড:

যেকোনো অকেশনের জন্য প্রোপার ড্রেসিং মানেই হচ্ছে অর্ধেক প্রস্তুতি সম্পন্ন করে ফেলা। করপোরেট মিটিং এ আউটফিট পারফেক্ট হলে কনফিডেন্স বেড়ে যায় কয়েকগুণ। চেষ্টা করবেন ফরমাল ড্রেস কোড মেনটেইন করতে। এমন পোশাক পরবেন যা আপনার জন্য অস্বস্তিকর না হয়, আবার খুব ক্যাজুয়াল ও না হয়।

কালারের ক্ষেত্রে হালকা কালারগুলোই বেশি স্যুইটেবল। স্যুট, ব্লেজার, সালোয়ার কামিজ, শাড়ি যাই পরুন না কেন, তা হবে পরিপাটি এবং মেকআপ হবে মার্জিত কিন্তু ব্যক্তিত্বপূর্ণ। ঠিকঠাক ভাবে তৈরি হতে পারলে আয়নায় তাকিয়ে দেখতে পাবেন, আপনার কনফিডেন্স নিজে থেকেই কতটা বেড়ে গেছে।

প্রশ্ন করার অভ্যাস:

অফিসের মিটিংয়ে মনোযোগ দেওয়া ও প্রশ্ন করা জরুরি। তাই কারো কথা বুঝতে কোনো সমস্যা হলে অবশ্যই প্রশ্ন করবেন। এতে কাজের প্রতি আপনার আগ্রহ প্রকাশ পাবে। একই সঙ্গে সপ্রতিভ হয়ে যেখানে দরকার সেখানে মতামত দিতে পারেন। এতে শুধু নিজের কাজ নয়, অফিসের সব গুরুত্বপূর্ণ দিকেই যে আপনার আগ্রহ আছে, তা স্পষ্ট হবে। প্রশ্ন করতে আন ইজি লাগলেও জড়তা কাটিয়ে কয়েকটা প্রশ্ন করে ফেলতে পারলেই আপনার কনফিডেন্স ফিরে আসবে, তা নিজেই টের পাবেন।

সময়ের আগে মিটিংয়ে জয়েন করুন:

অনেক সময় দেখা যায় অফিসের মিটিং রুম বা মিটিং স্পেসটা শুধু স্পেশাল অকেশনে ব্যবহার করা হয়। এর ফলে সেই জায়গাটা কেন্দ্র করে তৈরি হতে পারে অস্বস্তি। এটা কাটাতে নির্ধারিত সময়ের আগেই অফিসে আসুন, মিটিং স্পেসটা ঘুরে দেখুন, কলিগদের সঙ্গে কথা বলুন। এতে করে আস্তে ধীরে জড়তা কেটে যাবে। দেখবেন আগের মত দমবন্ধ অথবা নার্ভাস লাগছে না। অপ্রত্যাশিত পরিস্থিতি ও অপরিচিত পরিবেশকে এভাবে নিজের মতো করে কমফোর্টেবল করে নিতে পারলে তা আপনার কনফিডেন্স এমনিই বাড়িয়ে দেবে আর আপনার পারফরম্যান্সকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করবে।

নিজের উপর বিশ্বাস রাখুন:

মানুষ নার্ভাস হয়ে প্রথমেই যেসব চিন্তা করে, সেগুলোর মধ্যে একটা হলো, তিনি হয়তো অন্যদের মতো দক্ষ বা মেধাবী নন। এ ধারণা আমাদের মনে দ্বিধার জন্ম দেয়। তাই নিজের ওপর প্রথমেই বিশ্বাস রাখতে হবে। অফিস মিটিং এ কী বলবেন তা ঠিক করে নেয়া, কনফিডেন্স এর সঙ্গে সেগুলো প্রেজেন্ট করা এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের ওপর পূর্ণ আস্থা রাখা। আপনি যোগ্য বলেই এখানে আছেন। আপনার যোগ্যতাই আপনাকে সামনে নিয়ে যাবে এ ধরনের পজিটিভ মাইন্ডসেট রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে, আপনাকে কনফিডেন্ট দেখেই অন্যরা আপনাকে ভরসা করবেন।

বডি ল্যাঙ্গুয়েজ:

ড্রেসিং এর সঙ্গে সঙ্গে বডি ল্যাঙ্গুয়েজও পজিটিভ রাখতে হবে। আপনার পজিটিভ বডি ল্যাঙ্গুয়েজ পুরো পরিস্থিতিই চেঞ্জ করে দিতে পারে। শরীর সোজা রেখে কাঁধ টানটান রাখা, মনোযোগের সঙ্গে আগ্রহী চোখে মিটিং অ্যাটেন্ড করা, এগুলোই পজিটিভ বডি ল্যাঙ্গুয়েজ।

নিজস্বতা রাখতে হবে:

নিজেকে জোর করে অন্য কারো মতো দেখানোর চেষ্টা করার দরকার নেই। আপনার নিজস্ব ব্যক্তিত্ব ও বুদ্ধিমত্তা যাতে প্রকাশ পায় সেদিকে খেয়াল রাখুন। আপনার নিজস্ব চিন্তা ধারা, কাজকর্ম ও ব্যক্তিত্ব আপনাকে অন্য সবার চাইতে আলাদা করবে। প্রত্যেকের চোখে আপনার একটা নিজস্ব পরিচয় তৈরি করবে।

পরিশেষে বলা যায়, অফিস মিটিং, প্রেজেন্টেশন বা গেট টুগেদারের ভয় অবশ্য একদিনেই কেটে যাবেনা। এর জন্য প্রয়োজন অভ্যস্ততা ও সঠিক প্র‍্যাক্টিস।

বিআরইউ