বিনামূল্যে বই পড়াবে ‘বই-বিহঙ্গ’

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: নভেম্বর ৯, ২০২৩, ০৯:২৭ পিএম

বাংলা ভাষাকে অক্ষুণ্ণ রাখতে এবং সাহিত্যের আভিজাত্য ও সৌন্দর্যকে ছড়িয়ে দিতে যাত্রা শুরু করেছে ‘বই-বিহঙ্গ’। বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় উদ্বোধন করা হয় বই-বিহঙ্গের। উদ্ধোধনের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদস্যদের মাঝে বই বিনিময়ের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে সংগঠনটি।

বই-বিহঙ্গের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মো. খশরু বলেন, পাখি যেমন মুক্ত আকাশে ডানা মেলে ঘুরে বেড়ায়, বই-বিহঙ্গ ঠিক তেমনই মুক্তভাবে সকল বইপ্রেমী মানুষের কাছে পৌঁছাতে চায়। এমনকি চায় সকল মানুষের মধ্যে বইয়ের প্রতি ভালোবাসার জায়গা তৈরি করতে। পাঠকের মস্তিস্কের উর্বরতা নিশ্চিত করতে পাঠকের দরজায় গিয়ে হাজির হতে চায় শুদ্ধ সাহিত্যের বই নিয়ে। এমন প্রেক্ষাপটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় একদল স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে যাত্রা শুরু করলো ‘বই-বিহঙ্গ’। বিনামূল্যে বইপ্রেমীরা তাদের পছন্দের বই পড়তে পারবে বই-বিহঙ্গ থেকে। ‘বই-বিহঙ্গ’ স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্যরা পাঠকের হাতে নিজেরাই পৌঁছে দেবে বই। পড়া শেষে আবার তারা নিজেরাই গিয়ে বই সংগ্রহ করে নিয়ে আসবে।

জানা যায়, পাশাপাশি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অফ প্রফেশনালস, ঢাকা কলেজ, পাবনা জেলা, বরিশাল জেলাসহ কয়েকটি ক্যাম্পাস এবং জেলায় কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা চলছে সংগঠনটির। ক্রমান্বয়ে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং জেলা এবং এক সময়ে উপজেলাগুলোকেও এই সেবার আওতায় আনা হবে। নিজ নিজ ক্যাম্পাস কিংবা জেলায় কোন কোন বই সংগ্রহে আছে তা ডাটাবেজের মাধ্যমে অনায়াসে জানতে পারবে পাঠক।

বই-বিহঙ্গ পরিচালনা পর্ষদ মনে করেন, বইয়ের প্রতিটি পাতার প্রতিটি শব্দের আলাদা সৌন্দর্য রয়েছে। সেই সৌন্দর্য এই প্রজন্মের মাঝে বিকশিত হলে আগামী প্রজন্মও একটি নিরাপদ পৃথিবী পেতে পারে। এমনকি বই-বিহঙ্গ হবে প্রজন্মের সাথে প্রজন্মের মেলবন্ধনস্বরূপ, সেতুর মতো। সেই সেতুটা দাঁড়িয়ে থাকবে বাংলা ভাষার সঠিক ব্যবহার এবং সুন্দর ও সুশীল সাহিত্যের আভিজাত্যের উপর। পরিচালনা পর্ষদ আরো জানায়, বই-বিহঙ্গ প্রাথমিক পর্যায়ের শিশু, অভিভাবক এমনকি বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিকদেরকে নিয়েও ভবিষ্যত পরিকল্পনা করবে। এমনকি দেশের সঠিক ইতিহাস তরুণ প্রজন্মসহ সকলের কাছে পৌঁছে দিতে আলাদাভাবে পরিকল্পনা সাজাবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বই-বিহঙ্গের প্রতিষ্ঠাকালীন সকল সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। বই-বিহঙ্গের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, নজরুল গবেষক এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘বই নিয়ে ছড়িয়ে ও ছাড়িয়ে যাও দিক থেকে দিগন্তে।’

বই-বিহঙ্গ প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ড. রেবেকা সুলতানা বলেন, ‘পৃথিবীকে পরিবর্তনে বইয়ের বিকল্প নেই। ভাবনা চিন্তা করেও মানুষ অনেক কাজই ভুল করে ফেলতে পারে। তবে না ভেবেও বই পড়ার ফলাফল কখনো খারাপ হয়না।’

এমন যাত্রাকে অনুপ্রাণিত করে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক এবং ঢাকা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ আয়েশা বেগম বলেন, ‘তরুণদের সাথে কাজ করা সবসময় আনন্দের। তরুণদের কাজের মধ্যে আসলে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায়। বইয়ের এই কর্মযজ্ঞ চলুক যুগ থেকে যুগান্তর।’

এআরএস