গত বছরের তুলনায় স্বাস্থ্যের বরাদ্দ প্রস্তাব দুই শতাংশ কম করা হয়েছে। বরাদ্দের পরিমাণ গত বছরের সমান কিংবা বাড়ানো উচিত বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
বুধবার (১৫ জুন) দুপুরে স্বাস্থ্য মিলনায়তনে হেলথ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত কেমন হলো স্বাস্থ্য বাজেট ২০২২-২৩ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, এবছর স্বাস্থ্যের বাজেট বরাদ্দ প্রস্তাব ১২ শতাংশ বেড়েছে। গত বছর বেড়েছিলো ১৪ শতাংশ। গত অর্থ বছরের তুলনায় এ বছর দুই শতাংশ কম বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে। করোনায় কিছু কাজ করতে পারিনি। উন্নয়নমূলক কাজ করতে থোক বরাদ্দ বাড়ানো দরকার।
জাহিদ মালেক বলেন, বিগত বছরের তুলনায় বাজেট বরাদ্দ প্রস্তাব সেভাবে বাড়েনি। তবে ট্রেনিং, গবেষণায় গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। সেখানে ১০০ কোটি টাকা গবেষণায় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য বরাদ্দ বেড়েছে। করোনা বাড়ছে। আবার ভ্যাকসিনেশনের জন্য বিদেশ নির্ভরতা কমাতে দেশেই ভ্যাকসিন প্রোডাকশনে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবায় জোর দেওয়া হচ্ছে। করোনা নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ভালো কাজ করেছে। ভ্যাকসিনেশনে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে। এবার বাজেটে কৃষি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। মানবসম্পদ উন্নয়নে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। অন্যান্য মন্ত্রণালয় মিলে এই বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে সরকার প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করবে।
স্বাস্থ্যের প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতির কথা স্বীকার করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের উন্নয়ন প্রকল্প একটু ধীরগতিতে সম্পন্ন হয়। এখানে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের হাত নেই। বড় প্রকল্প পিডাব্লিউডি কাজ করে। প্রতিষ্ঠানটি অন্য আরেকটি মন্ত্রণালয়ের। আমাদের জনবল শর্টেজ, অভিজ্ঞতারও অভাব রয়েছে। প্রকৌশলি শর্টেজও রয়েছে। করোনা আমাদের আরও পিছিয়ে দিয়েছে। নির্মাণ পণ্যের দাম বাড়লেও ঠিকাদার ধীরগতিতে কাজ হয়।
তিনি আরও বলেন, আমাদের যে বাজেট দিয়েছে সেটা যদি সুষ্ঠুভাবে ব্যয় করতে পারি তাহলে হেলথ সিস্টেমে আউট অফ পকেট এক্সপেন্ডিচার কমবে। এজন্য স্বাস্থ্য সেবা সিস্টেমকে ইমপ্রুভ করতে হবে। পরিধি বাড়াতে হবে।
স্বাস্থ্যের সাথে অনেক কিছু দায়ী। পলিথিন পরিবেশ বিপন্ন করে। এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে। পলিথিন ব্যান্ড হওয়া উচিত। নয়তো ট্যাক্স বাড়ানো উচিৎ। তামাকেও ট্যাক্স বাড়ানো উচিত।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব ডা. আ. আজীজ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম, কমিউনিকেবল ডিজেজস কন্ট্রোল ডিভিশনের লাইন ডাইরেক্টর ও মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম, হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের সভাপতি রাশেদ রাব্বী, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল। অনুষ্ঠানে প্যানেল স্পেশালিস্ট হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ, মেরী স্টপস ক্লিনিকের ফোকাল পার্সন মুনজুন নাহার।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফোরামের সহসভাপতি সেবিকা দেবনাথ।