সারাদেশে বিদ্যুৎ-জ্বালানি সাশ্রয় ও যানজট নিরসনে রাত ৮টার পর সব ধরনের দোকানপাট, শপিংমল, মার্কেট, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও রাত ২টার মধ্যে হাসপাতালের সঙ্গে সংযুক্ত নিজস্ব ওষুধের দোকান বন্ধ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু বরিশাল নগরীর পাড়া-মহল্লা কিছু অসাধু ব্যবসায়ীরা। ঘোষণার এক মাসের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বরিশাল নগরীর শপিংমল, মার্কেট ছাড়া এ নির্দেশনা মানতে নারাজ কিছু খাবারের হোটেল ব্যবসায়ীরা, ফার্মেসি ব্যবসায়ীরা ও পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ দোকানরা।
মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) রাতে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, নগরীর ফকির বাড়ি রোর্ড, চকবাজার, পলাশপুর, লঞ্চঘাট, চাঁদমারি, বেলতলা নূরিয়া মাদ্রাসার সামনে, বেলতলা খেয়াঘাট, চরকাউয়া খেয়াঘাট, কেডিসিসহ নগরীর বেশ কয়েক জায়গায় দোকান খোলা ছিলো।
লঞ্চঘাটের খাবারের হোটেলের মালিকরা জানান, করোনার ধকল কাটিয়ে ব্যবসায় ফেরার পর এ ধরনের নির্দেশনা মানতে গেলে তাদের পথে বসতে হবে। তাই তারা এ ধরনের নির্দেশনা মানতে চান না। বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে আরো দেখা গেছে কোনো কোনো খাবার হোটেল সারারাত খোলা রয়েছে।
অন্যদিকে রাত ২টার মধ্যে হাসপাতালের সাথে সংযুক্ত নিজস্ব ওষুধের দোকান বন্ধ রাখার প্রসঙ্গে ব্যবসায়ীরা বলেন, ‘রাত ১২টার পর যদি কেউ অসুস্থ হন। তাহলে রোগীর পরিবার কোথাও ওষুধ পাবে না। বিনা চিকিৎসায় যদি কোনো রোগী মারা যাবেন। তাহলে এর দায়ী কি সরকার নিবে।’
এদিকে নগরীর পাড়া-মহল্লার অধিকাংশ দোকান চলছে আগের নিয়মেই। তারা প্রতিবেদকে বলেন, দিনের তেমন বেচা-বিক্রি করতে পারি না। আর আগের নিয়মে দোকান খোলা রাখলে আমরা না খেয়ে মরে যাবো। রাতে মানুষ হাটতে বের হলে একটু চা খায়। তার সাথে বিস্কুট, সিগারেটও খায়।
এ বিষয়ে সোনিয়া নামে এক ক্রেতা বলেন, ‘এই সবকিছুর তদারকির দায়িত্ব হচ্ছে জেলা প্রশাসকের। প্রথম প্রথম বেশ কয়েকদিন তদারকির বিষয়টি আমার চোখে পরেছে। কিন্তু বর্তমানে দৃশ্যমান কোনো উদ্যোগ দেখচ্ছি না জেলা প্রশাসকের। বড় কোনো অভিযানের ঘটনাও চোখে পরেনি।’
বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যলয়ের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাহ মোঃ রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পূজা উপলক্ষে আমাদের অভিযান স্থগিত রাখা হয়েছিলো। তবে আগামীকাল থেকে পূর্নরায় কঠোর অভিযানে নামবে জেলা প্রশাসক।’
এ বিষয়ে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ সাইফুল ইসলাম বিপিএম (বার) বলেন, ‘আমার প্রতিনিয়ত মনিটরিং করছি। আমরা দোকানদারদের দোকান বন্ধ করতে বললে, তারা ঠিকই দোকান বন্ধ করে। কিন্তু ওই জায়গা থেকে সরে যাওয়া সাথে সাথেই আবার দোকান খুলে বসে তারা। আমাদের পুলিশের চেয়েও বেশি প্রয়োজন জেলা প্রশাসক কর্তৃক মেবাইল কোর্টের অভিযান আরও বেশি কঠোতর করার।’
তবে এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে চাইলে তাকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তাকে একটি ক্ষুদে বার্তা পাঠালেও কোনো উত্তর আসেনি প্রতিবেদকের কাছে।
কেএস