ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং: আশ্রয়কেন্দ্রে আনার কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে সেনাবাহিনী

মো. মাসুম বিল্লাহ প্রকাশিত: অক্টোবর ২৪, ২০২২, ০২:৫৭ পিএম

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের কারণে দুর্গম এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে সম্পৃক্ত হচ্ছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ড। 

সোমবার (২৪ অক্টোবর) সচিবালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সভা শেষে ব্রিফিংয়ে  দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৭ হাজার ৩০টির মতো শেল্টার প্রস্তুত করা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রে লোক নেবার কাজ সকাল থেকেই শুরু হয়েছে। এটাকে এই মুহূর্তে আরো জোরদার করা হয়েছে। 

আমরা আশা করি আমাদের মাঠ প্রশাসন, আমাদের ভলেন্টিয়াররা যেভাবে কাজ করছে, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার শতভাগ মানুষকে আমরা সরিয়ে আনতে পারব।

"ইতোমধ্যে মিটিংয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রতিনিধিকে বলা হয়েছে তারা যেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে সম্পৃক্ত করে দুর্গম এলাকা থেকে লোকজনকে সরিয়ে আনার জন্য তারা যেন সহযোগিতা করে। তারা এতে সম্মতি দিয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, রেড ক্রিসেন্টের ভলেন্টিয়াররা সিপিপি ভলেন্টিয়ারদের সাথে কাজ করছে।"

এটি ‍‍`সিবিআর সাইক্লোন‍‍` বলে জানান তিনি। এটি কি ঘূর্ণিঝড় সিডরের মত ধ্বংসাত্মক হবে কিনা- জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিডর ছিল সুপার সাইক্লোন। 

সিবিআর সাইক্লোনের পরে আরেকটা আছে সেটা হচ্ছে ভেরি সিবিআর সাইক্লোন। তারপরে সুপার সাইক্লোন। বাতাসের গতিবেগ ৮০ থেকে ১০০ কিলোমিটার হলে এটাকে সিবিআর সাইক্লোন বলা হয়। এটা (সিত্রাং) ভেরি সিবিআর অথবা সুপার সাইক্লোন হওয়ার আপাতত আমাদের কোন প্রেডিকশন নাই।

১৫টি জেলায় ২৫ লাখ মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে বলেও এসময় জানান প্রতিমন্ত্রী।

"আম্পানে আমরা ২৪ লাখ ৭৬ হাজার আশ্রয় দিতে পেরেছিলাম। এখানে আমরা ২৫ লাখের মতো টার্গেটে রেখেছি ১৫ জেলায়।‍‍`‍‍`

এটি চূড়ান্ত আঘাত কখন আনবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা চূড়ান্ত আঘাত বলতে কেন্দ্র বা সেন্টারকে আই বলি। আইয়ের আঘাতকে আমরা চূড়ান্ত বলি। আবহাওয়াবিদদের মতে এটা আগামীকাল সকাল ছয়টা থেকে সাতটার মধ্যে আঘাত আনবে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা প্রতিটি জেলায় ৫ লাখ টাকা করে অর্থ বরাদ্দ দিয়েছি যদি রান্না করা খাবার প্রয়োজন হয়। এছাড়া আমরা ড্রাই কেক এবং ড্রাই বিস্কিট পাঠিয়েছি। চাল, তেল, লবণ, চিনি এবং গুড়া মসলা পাঠিয়েছি যাতে রান্না করে খাবার খাওয়াতে পারে।

ইতোমধ্যে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এটা ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত পর্যন্ত যেতে পারে।

এ ঘুর্ণিঝড়ে মানুষ এবং গবাদিপশুর কোন ক্ষতি না হলেও মৎস্য এবং কৃষি সম্পদের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কার কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।

আপনারা কতটা প্রস্তুত- জানতে চাইলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ইনশাল্লাহ আমাদের যে প্রস্তুতি মানুষ এবং গবাদি পশুর কোন ক্ষতি আসলেই হবে না। 

তবে মৎস্য সম্পদ এবং কৃষি সম্পদের আমরা কোন নিশ্চয়তা দিতে পারব না। প্রাকৃতিক দুর্যোগে এগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, কোনভাবেই ক্ষতিটা মোকাবেলা করা যায় না।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফোনে আমাকে নির্দেশনা দিয়েছেন, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলা করার সবচেয়ে বড় সফলতা হলো শতভাগ ঝুঁকিপূর্ণ মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে এনে তাদের জীবন রক্ষা করা। একটি লোকও যদি মৃত্যুবরণ না করে তাহলে সেখানে সেটাই হলো সবচেয়ে বড় সফলতা। 

একই সাথে তিনি বলেছেন গবাদি পশুগুলোকে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করার জন্য। এখন সব আশ্রয়কেন্দ্রে গবাদি পশুর আশ্রয়ের ব্যবস্থা আছে। লোকজন যারা আসছেন, তারা তাদের গবাদি পশুসহ আসছেন। আর একটি নির্দেশনা তিনি দিয়েছেন, আমরা যেন লোকজনকে উপদেশ দেই তাদের ঘরে যে খাদ্যগুলো আছে সেগুলো যাতে সঠিকভাবে মজুত করার ব্যবস্থা করেন।

টিএইচ