‘সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে শৃঙ্খলা ও সচেতনতার পাশাপাশি মানুষের আচরণ পরিবর্তন জরুরি। সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিনই প্রাণ হারাচ্ছে মানুষ। পঙ্গুত্ব বরণ করে বোঝা হচ্ছে পরিবারের। তারপরও সড়কে ফিরছে না শৃঙ্খলা, সচেতন হচ্ছে না মানুষ।’
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)- এর ২৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
শুক্রবার (২ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এ অনুষ্ঠান হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের এই অনুষ্ঠান থেকে সহায়তা করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন, সড়ক নিরাপত্তায় জাতিসংঘ একটি প্রেসক্রিপশন ও পাঁচটি পিলার দিয়েছে। প্রত্যেকটিতে কিন্তু টার্গেট অনুযায়ী কাজ করতে হবে। সড়কের নিরাপত্তার জন্য প্রতিটি স্টেপই গুরুত্বপূর্ণ।
তারা আরো বলেন, আমরা রোড সেফটি নিয়ে ১১১টি পরামর্শ দিয়েছি। প্রতিটি পরামর্শকে পরিকল্পনার মধ্যে নিয়ে বাস্তবায়নের জন্য সাজাতে হবে এবং কার্যকর করতে হবে। একই সঙ্গে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর পরিপূর্ণ প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এ বি এম আমিন উল্লাহ নূরী বলেন, একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। চালক, গাড়ি, পথচারী, আচরণ, আইনের প্রয়োগের অভাব ও সচেতনতার অভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে। এসব বিষয় নিয়ে আমাদের কাজ করতে হবে। সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নিরাপদ সড়ক চাই এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, আমার স্ত্রী মারা যায় ২২ অক্টোবর। আমি আন্দোলন শুরু করি ১ ডিসেম্বর। এত দেরিতে কেন শুরু করি, কারণ আমি বুঝতে চেয়েছিলাম নিরাপদ সড়কের জন্য কী করতে হবে এবং করতে পারব কি-না।
তিনি আরো বলেন, নিরাপদ সড়ক আন্দোলন যারা করেন, তাদের কোনো স্বার্থ নেই। তারা দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে এটি করেন। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য মাটির ব্যাংকে টাকা জমাই। সেই টাকা দিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত এবং তাদের পরিবারকে সহায়তা করি
প্রতিবছরের মতো এবারো প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে সহায়তা কার্যক্রম বাস্তবায়নের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে নিসচা। ১ ডিসেম্বর এই কার্যক্রমের সূচনা করা হয়।
নিরাপদ সড়ক চাই এর মহাসচিব লিটন এরশাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদার। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক কেন্দ্রীয় দফতর সম্পাদক ফিরোজ আলম মিলন।
আরও উপস্থিত ছিলেন বিআরটিএর সাবেক চেয়ারম্যান আইয়ুবুর রহমান, নিসচার ভাইস চেয়ারম্যান মঞ্জুলি কাজী, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক মো. রোকনুজ্জামান রোকন, নিসচার সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম আজাদ হোসেন প্রমুখ।
টিএইচ