রাজধানীর দিয়াবাড়িতে ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে দেশের প্রথম মেট্রোরেলের উদ্বোধন ঘোষণা করেছেন বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় তিনি দিয়াবাড়ি খেলার মাঠে তৈরি উদ্বোধনী মঞ্চে আসেন এবং ফলক উন্মোচন করে এ বৈদ্যুতিক ট্রেনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।
ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ দেশের প্রথম এ মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া নির্ধারণ করেছে ৫ টাকা। সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। তার মানে মেট্রোরেলে চড়তে ন্যূনতম ২০ টাকা গুনতেই হবে। উত্তরা দিয়াবাড়ি (উত্তরা নর্থ স্টেশন) থেকে আগারগাঁও স্টেশন পর্যন্ত ভাড়া ঠিক করা হয়েছে ৬০ টাকা। উত্তরা নর্থ স্টেশন থেকে উত্তরা সেন্টার ও উত্তরা সাউথ স্টেশনে যেতে সর্বনিম্ন ভাড়া ওই ২০ টাকাই দিতে হবে। উত্তরা নর্থ থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৪০ টাকা এবং শেওড়াপাড়া স্টেশনের ভাড়া ৫০ টাকা। আর পল্লবী থেকে মিরপুর-১১, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া স্টেশনের ভাড়া একই, ২০ টাকা। পল্লবী থেকে শেওড়াপাড়া ও আগারগাঁও স্টেশনের ভাড়া ৩০ টাকা। মেট্রোরেলের দ্বিতীয় ধাপ চালু হলে মিরপুর-১০ নম্বর থেকে ফার্মগেট যেতে গুনতে হবে ৩০ টাকা, আর কারওয়ান বাজার যেতে লাগবে ৪০ টাকা।মিরপুর–১০ স্টেশন থেকে শাহবাগ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাড়া ৫০ টাকা, সচিবালয় ও মতিঝিল স্টেশনে যেতে লাগবে ৬০ টাকা। তবে মিরপুর-১০ থেকে কমলাপুর স্টেশনে যেতে লাগবে ৭০ টাকা ভাড়া।
টিকিট কাটবেন কিভাবে
মেট্রোরেলে দুই ধরনের টিকিটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। একটি দীর্ঘ মেয়াদে ব্যবহারের এমআরটি পাস, অন্যটি দিয়ে চড়া যাবে একবার। শুরুতে কেবল মেট্রোরেল স্টেশনের কাউন্টার থেকে নির্দিষ্ট জামানত দিলে মিলবে এমআরটি পাস। আর একবারের যাত্রার জন্য টিকিট মিলবে স্টেশনে থাকা কাউন্টার এবং পাশের স্বয়ংক্রিয় ‘টিকিট মেশিন’ থেকে। যাত্রা শেষে নির্ধারিত মেশিনে টিকিট কার্ডটি ফেরত দিলে তবেই স্টেশন থেকে বের হতে পারবেন যাত্রীরা।
মেট্রোরেলের নির্মাণ খরচ
মেট্রোরেলের প্রথম পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল ২০০৫ সালে। রাজধানীর জন্য তৈরি কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) বলা হয়েছিল মেট্রোরেলের কথা। মেট্রোরেলের মোট ব্যয় প্রায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এরমধ্যে জাইকা ঋণ দিচ্ছে ১৯ হাজার ৬৭৫ কোটি ৭০ লাখ টাকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৯৬ কোটি ২৯ লাখ টাকা সরকারি তহবিল থেকে খরচ করা হবে। ঋণের গ্রেস পিরিয়ড ১০ বছর। পরিশোধ করতে হবে ৩০ বছরের মধ্যে।
কিভাবে করবেন মেট্রোরেলের এমআরটি পাস
প্রথমদিকে একাধিকবার ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করা এমআরটি পাস সংগ্রহ করতে হবে স্টেশনের টিকেট কাউন্টার থেকে। একটি পাসে প্রতিবার শুধুমাত্র একজন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারবেন। জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম নিবন্ধন কিংবা পাসপোর্ট নম্বর দিয়ে আবেদন করে নিতে হবে এমআরটি পাস। এমআরটি পাসের জন্য শুরুতে মোট ৪০০ টাকা জমা করতে হবে। এর মধ্যে ২০০ টাকা জামানত (ফেরতযোগ্য) এবং ২০০ টাকা ভাড়া। পরে ১০০ টাকা বা তার গুণিতকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত টপ আপ করা যাবে ওই পাসে।
এআই