অ্যান্টিবায়োটিকের যত্রতত্র ব্যবহারের পেছনে যত্রতত্র ফার্মেসি অন্যতম কারণ উল্লেখ করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ বলেছেন, দেশে নিবন্ধিত ফার্মেসি দেড় লাখের মতো। এখনো নিবন্ধনের বাইরে লাখের বেশি ফার্মেসি।
শুক্রবার (০৬ জানুয়ারি) ঢাকার সাভারের হেমায়েতপুরে লাজ ফার্মার সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে যত ফার্মেসি রয়েছে, পৃথিবীর আর কোনো দেশে এতো ফার্মেসি নেই। এক সময় কয়েক কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে ওষুধ আনতে হতো, এখন হাত বাড়ালেই ফার্মেসি। মাথাব্যাথাসহ যেকোনো কিছু হলে সঙ্গে সঙ্গে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছে। ইচ্ছে মতো অ্যান্টিবায়োটিক নিতে পারছে মানুষ। এক্ষেত্রে ফার্মেসিগুলো কোনো নিয়ম মানছে না। এতে করে অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা হারাচ্ছে। এমনকি আইসিইউতে যে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়, সেটিও কাজে আসছে না। বিশ্বব্যাপী সামনে যা মহামারি রূপ নেবে।
ব্যবস্থাপত্র ছাড়া ওষুধ না দিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানিয়ে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, ইতোমধ্যে আইন মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে। সামনে সংসদে পাস হবে আশা করি। একই সঙ্গে অবৈধ ফার্মেসিগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। উন্নত দেশে ফার্মেসি একই রকম হলেও আমাদের এখানে ফার্মেসির পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যও চলে। তাই লাজ ফার্মার মতো মডেল ফার্মেসি ও মাননিয়ন্ত্রণ করতে পারে এমন ফার্মেসি ছাড়া বাকি সবগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে সেই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
লাজ ফার্মার প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. লুৎফর রহমান বলেন, লাজফার্মা লিমিটেড একটি প্রতিষ্ঠিত এবং সর্বাধিক বিশ্বস্ত খুচরা ওষুধ বিক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান, যারা মানসম্মত ওষুধ বিক্রি করে। আমাদের মূললক্ষ্য সেবা, ব্যবসা নয়। আমরাই দেশের প্রথম সার্টিফাইড মডেল ফার্মেসি যারা নির্ধারিত তাপমাত্রায় ওষুধ সংরক্ষণ করে।
লাজ ফার্মার চেয়ারম্যান সৈয়দা মাহফুজা রহমান বলেন, আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছি। লাজ ফার্মার কর্মীদের মনে রাখতে হবে কোনো ধরনের অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করা যাবে না। প্রতিষ্ঠানের সুনাম ধরে রাখতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে লাজ ফার্মার সেবা পৌঁছে দিতে হবে। কারো বিরুদ্ধে যেন কোনো অনিয়মের অভিযোগ না আসে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক আইজিপি ও বর্তমান সৌদি আরবে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত ড. জাবেদ পাটোয়ারী, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ, বিশিষ্ট পরমাণু বিজ্ঞানী ড. এম শমসের আলী, সাবেক সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান, সাবেক সচিব নজরুল ইসলাম খান, একুশে পদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক যাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) ডা. মোস্তাফিজুর রহমান, সাংবাদিক ও কলামিষ্ট আবেদ খান, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. বিকর্ণ কুমার ঘোষ, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার প্রাপ্ত গীতিকার মো. রফিকউজ্জামান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ বুরো (বিএমইটি) এর মহাপরিচালক মো. শহীদুল ইসলাম, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক ও রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা অধ্যাপক ডা. এম এ রশিদ প্রমুখ।
এআরএস